রংপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন, প্রেমিকাকে নির্যাতন

রংপুরের মিঠাপুকুরে বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিক আশিকুল নবীন (২৫) নামে এক নৌ সদস্যের বাড়িতে অনশন করতে গিয়ে মারপিটের শিকার হয়েছেন কলেজছাত্রী এক প্রেমিকা। দুই দিন অনশনে থাকলেও কোন সমাধান না পেয়ে অবশেষে মামলা করেছেন তিনি। প্রেমিক আশিকুল নবীন উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রুপসী হাজীপাড়া (বাঁশটারী) গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে এবং সে একজন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সদস্য।

স্থানীয়রা জানায়, গত বুধবার বিকেল থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রেমিক নবীনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করেন ওই কলেজছাত্রী। এসময় বাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তবুও ওই কলেজছাত্রী প্রেমিক নবীনের সাথে দেখা করার আকুতি জানিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। সেখানে উৎসুক গ্রামবাসীরা জড়ো হন। মেয়েটির আহাজারিতে স্থানীয়রা মর্মাহত হলেও ছেলের পরিবারের লোকজন নিরব ভূমিকা পালন করে। পরে ওই ছাত্রীকে বুঝিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় স্থানীয় লোকজন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে অবশেষে আদালতে মামলা করেছেন অনশনকারী ওই কলেজছাত্রী।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, প্রায় ৮ মাস আগে আশিকুল নবীনের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তাদের মধ্য প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক রূপ নেয় দৈহিক সম্পর্কে। কিছুদিন আগে প্রেমিক নবীনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু নবীন বিয়েতে রাজি না হয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন। নবীন অন্যত্র বিয়ে করছেন জানতে পেরে বাধ্য হয়ে গত বুধবার বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। অনশনের খবর পেয়ে পরদিন সকালে কর্মস্থল চট্টগ্রামে চলে যান প্রেমিক নবীন। ওই ছাত্রী আরও বলেন, বাড়িতে গিয়ে সম্পর্কের কথা নবীনের বাবা-মাকে জানালে তারা তাদের লোকজনসহ তাকে মারধর করেন। পরে তাদের বাড়ির সামনে অনশন শুরু করেন। একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আদালতে মামলা করেন।

অভিযুক্ত আশিকুল নবীন বলেন, ওই কলেজছাত্রীর সাথে আমার বন্ধু হিসেবে পরিচয়। এর বাইরে কোন সম্পর্ক নেই। দুজনের একসাথে ছবি কেন? জানতে চাইলে বলেন, ঘুরতে গিয়ে বন্ধু হিসেবে ২/৩ টা সেলফি তুলেছি কিন্তু আমাদের মাঝে শারীরিক কিছু হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, ঘটনাটি শুনেছি মেয়ের ২জন অভিভাবক থানায় এসেছিল। তাদেরকে ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রীসহ থানায় এসে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা আর থানায় আসেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।