রংপুরে ৪০ হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রি, ক্লিনিক পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ৩

রংপুরে ৪০ হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রির অভিযোগে ক্লিনিক পরিচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ বিভাগ কার্যালয়ে উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন—রংপুর নগরীর বাবুখাঁ কামারপাড়ার হলিক্রিসেন্ট ক্লিনিকের পরিচালক পল্লী চিকিৎসক এমএস রহমান রনি, পীরজাবাদ এলাকার রুবেল হোসেন রতন ও রতনের স্ত্রী জেরিনা আক্তার বিথী।

উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন জানান, রংপুর নগরীর বুড়ারঘাট এলাকার ওয়াসিম আকরামের স্ত্রী লাবনী ১৩ জানুয়ারি প্রসববেদনা নিয়ে হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই রাতে সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন। এর তিন দিন পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ লাবনী ও তার স্বামীকে বিল পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকে।ওয়াসিম ও লাবনী দম্পতির অসচ্ছলতাকে পুঁজি করে ক্লিনিকের পরিচালক এমএস রহমান রনি তার পূর্বপরিচিত জেরিনা আক্তার বিথী ও তার স্বামী রুবেল হোসেন রতনের কাছে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নবজাতককে বিক্রি করে দেন। এতে সহযোগিতা করেন লাবনীর স্বামী ওয়াসিম।

এ ঘটনায় লাবনী মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তা মামলা হিসেবে নেয়। পরে নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত লাবনীর স্বামী ওয়াসিমকে গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, আমরা তথ্য পাওয়ার পরপরই নবজাতক উদ্ধারসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করি। এমএস রহমান রনি ওই লাবনীর পূর্বপরিচিত। লাবনীকে তারা হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং পরবর্তীতে ক্লিনিক বিল পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার অজুহাতে নবজাতকটিকে বিক্রি করে দেন। আমরা লাবনীর স্বামী পলাতক ওয়াসিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
নবজাতকের মা লাবনী বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে পল্লী চিকিৎসক রনি টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা করতে নিষেধ করেছিলেন। ডেলিভারির পর তিনি বিল পরিশোধের জন্য চাপ দেন। আমার স্বামী দুই দিন সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা কিছুতেই রাজি হয়নি।

এরপর আমার স্বামী তার কিডনি বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। আমি আমার রক্ত বিক্রি করে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে চেয়েছি। তারা আমার স্বামীকে ম্যানেজ করে আমার নবজাতক ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে। আমি পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই, তারা দ্রুত আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিয়েছে।