রাজধানীর সড়কে গণপরিবহন কম, জনচলাচলও সীমিত
‘স্যার, মাছগুলা এক্কেবারে তাজা। আইজ কাস্টমার কম, তাই এই দামে পাইতাছেন। অন্যদিন হইলে কেজিতে অন্তত ৫০ টাকা বেশি দাম হইত।’ শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা শাহ আলম তার পরিচিত ক্রেতা আবদুল মান্নানকে উদ্দেশ্য করে এ কথাগুলো বলছিলেন। আবদুল মান্নান প্রতি শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজার থেকে বাজার করেন। মাছ বিক্রেতার কথা শুনে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলেন সত্যিই আজ বাজারে লোকজন কম।
অন্যান্য শুক্রবার মাছের বাজারে ক্রেতার ভিড়ে পা ফেলার উপায় না থাকলেও আজ ক্রেতার সংখ্যা অপেক্ষাকৃত অনেক কম। কারণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আজ দেশে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ উপলক্ষে পুরো রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সে কারণে অনেকেই বের হননি ঘর থেকে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগত বিদেশি ভিভিআইপিদের চলাচলের জন্য ২৬ ও ২৭ মার্চ ঢাকা নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত ও কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকবে। এ সাময়িক অসুবিধার জন্য ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশও করা হয়।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যা খুবই কম। বেশিরভাগ রাস্তাই ফাঁকা। যেসব গণপরিবহন রাস্তায় নেমেছে সেগুলো ফাঁকা রাস্তা পেয়ে ছুটছে ঝড়ো গতিতে। নগরীর বিভিন্ন সড়ক বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় পতাকা এবং আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির ছবি শোভা পাচ্ছে ।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান চলছে। এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা এসেছেন, এখনও আসছেন। তাদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীর অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ থাকছে। স্বাভাবিকভাবেই এ কদিন মানুষের রাস্তায় চলাচলের অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। বিকল্প রাস্তা খুঁজে পেতে লাটিমের মতো চক্কর খেতে হয়েছে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা কামরুল হাসান জানান, কয়েকদিন আগে মধ্য বাড্ডা থেকে তার বাসায় পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। এ কারণে এখন বুঝে-শুনে ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা দেখে তবেই বের হচ্ছেন বলে জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন