রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হচ্ছেন সৈয়দ আশরাফ

রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হওয়ার ঘোষণা দিয়েছন।

রবিবার সচিবালয় সংলগ্ন এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন ক্ষমতাসীন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

সচিবালয়ের উল্টো পাশে আব্দুল গণি রোডে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের পশ্চিম পাশে যানবাহন মেরামত কারখানার জমিতে বহুতল কার পার্কিং কাম মাল্টিপারপাস ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে সেখানে যান আশরাফ।

আশরাফ বলেন, ‘আমি অনেক দিন মাঠে ছিলাম না। এই যে আজ এসেছি, এখন থেকে আবার রাজনীতি শুরু করব।’

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর সৈয়দ আশরাফ যুক্তরাজ্যে চলে যান। স্বাধীন বাংলা সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের বড় ছেলে আশরাফ ১৯৯৬ সালের আগে দেশে ফেরেন। ওই বছরের ১২ জুনের নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আরও তিনটি নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে সংসদ সদস্য হন।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আশরাফ তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রমাণ দেন। আর ২০০৯ সালে দলের সম্মেলনে তাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এর পরের সম্মেলনেও তিনি একই পদে বহাল থাকেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) মন্ত্রী করা হয় সৈয়দ আশরাফকে। কিন্তু ২০১৫ সালের ৯ জুলায় তাকে মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। আর এলজিআরডি মন্ত্রী করা হয় ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। এর কিছুদিন পর ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় সৈয়দ আশরাফকে।

এদিকে ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর দলের সব শেষ জাতীয় সম্মেলনে আশরাফের বদলে ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয় আশরাফকে।

এরপর আশরাফের একটি বড় সময় কেটেছে যুক্তরাজ্যে তার অসুস্থ স্ত্রীর পাশে।

গত বছরের ২৩ অক্টোবর আশরাফের স্ত্রী শিলা ইসলাম লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন আশরাফ। নিজেকে সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে কিছুদিনের জন্য দূরে সরিয়ে রাখেন।

তবে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগে-পরে দলের বেশ কিছু কর্মসূচিতে আশরাফকে দেখা গেছে। এর মধ্যে একদিন সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কথা বললেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে একদিন তিনি বক্তব্য রাখেননি।

সদালাপী এবং স্বল্পভাষী আশরাফ সরকারি বহুতল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ অনুষ্ঠানে রাজনীতি খুব বেশি কথা বলেননি।

প্রকল্প অনুযায়ী, সরকারি যানবাহন মেরামত কারখানার ৬৮ হাজার ৭৫০ বর্গফুট জায়গার ওপর একটি ১০তলা ও একটি ২৫ তলা ভবন হবে। প্রতিটি ভবনের বেজমেন্টে ১০৭টি ও গ্রাউন্ড ফ্লোরে ১১টি পার্কিং করা যাবে। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ৬২টি করে গাড়ি পার্কিং করা যাবে।

১০তলা ভবনের ষষ্ঠ থেকে দশম তলা পর্যন্ত হবে অফিস। ২৫ তলা ভবনের ষষ্ঠ থেকে পঞ্চদশ তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোরে ৬২টি করে গাড়ি পার্কিং করা যাবে। ষোড়শ থেকে ২৫ তলা পর্যন্ত অফিস এবং হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহার হবে ছাদ।