রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আট মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা ৮ মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না। ফলে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাষ্টের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে রাজশাহীর নয়টি উপজেলায় মোট ২৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।

যার মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় ৩৪টি, চারঘাট উপজেলায় ২৩টি, বাঘা উপজেলায় ২০টি, পবা উপজেলায় ৩২টি, তানোর উপজেলায় ১৯টি, মোহনপুর উপজেলায় ১৯টি, দুর্গাপুর উপজেলায় ১৯টি, পুঠিয়া উপজেলায় ২৮টি, বাগমারা উপজেলায় ২০টি।

গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়েনের পিরিজপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোসাঃ রকিয়া খাতুন বলেন, আমরা প্রতিদিন শত শত রোগীকে সেবা দিচ্ছি। আগে বরাদ্ধ আসলে দুই এক মাস পর বা প্রতি মাসেই বেতন পেয়েছি।

গত ৮ মাস থেকে কোন বেতন হয়নি। এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ৮ মাস থেকে বেতন না পেলে সংসার চালাতে গিয়ে টাকা ধার ও বাকিও দিতে চাইনা কেউ।
গোদাগাড়ী উপজেলা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সমিতির সাধারন সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম বলেন, টানা গত ৮ মাস মাসেও হয়নি।

এ কারণে জেলার ২৩২ জন হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। অনেকেই ছেলেমেয়েদের পড়ার খরচ, পরিবারের অসুস্থ স্বজনদের চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না। বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক মাহবুব আলম অন্তর বলেন, ট্রাষ্ট ও রাজস্ব খাতের জটিলতার কারনে ৮ মাস ধরে বেতন ভাতা পাইনি। হাইকোটে রিট করে ট্রাষ্ট থেকে রাজস্ব খাতে যাওয়ার পক্ষে রায় হয়। আফিল করলে আফিলে ট্রাষ্টর পক্ষে রায় হয়।

২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর ট্রাষ্টে যোগ হয়। বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পাত করছে। বেতন ভাতা না পাওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা হতাশার মধ্যে থাকায় রোগীদের ঠিকমত স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারছেনা। ২০১১ সালে যারা কমিউনিটি ক্লিনিকে যোগদান করে ছিলেন তাদের সবার সরকারী বয়স সীমা শেষ হয়ে গেছে।

এ নিয়েও তারা দুশ্চিন্তায় আছে। সরকারী বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্য কোন চাকুরির সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধ করা সহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জোর দাবি জানিয়েছেন মাহবুব আলম অন্তর।

রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডক্টর মাহবুবা খাতুন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জটিলতার কারণে আট মাস ধরে বন্ধ আছে। বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অবগত করা হয়েছে, দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।