রিমান্ডে নাঈমের মুখোমুখি ড্রাইভার ও দেহরক্ষী
বনানীর হোটেলে ধর্ষণ মামলার আসামি নাঈম আশরাফের (আবদুল হালিম) সঙ্গে প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের ড্রাইভার বিল্লাল ও দেহরক্ষী আজাদকে (রহমত আলী) মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
শনিবার দিনগত রাতে ডিবি কার্যালয়ে তাদের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্ত সহায়ক কমিটি। এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও ডিবির কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, প্রায় ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাদের পাশাপাশি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় নাঈম স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং সে একজনকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।
এর আগে আদালতের নির্দেশে নাঈমকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। শনিবার ছিল ৭ দিনের দ্বিতীয় দিন।
জাগো নিউজকে ওই কর্মকর্তা জানান, আদালতে সাফাত ও সাদমান সাকিফ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে তাদের সঙ্গে নাঈমের বক্তব্যের কিছু অমিল পাওয়া গেছে। বিষয়গুলো নিশ্চিত হতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ড্রাইভার ও দেহরক্ষীকে মুখোমুখি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও দুই পক্ষের অনেক কথায় অমিল ছিল। নাঈমের সঙ্গে বিল্লালের হালকা তর্ক হয়। তাদেরকে ধর্ষণের ভিডিও করার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তারা এখনো ভিডিও’র বিষয়ে কিছু বলেনি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধর্ষণের ৪৮ মিনিটের ভিডিও উদ্ধার সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রকাশ হলেও গোয়েন্দা ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘আমরা একটি মারধরের ভিডিও পেয়েছিলাম, এছাড়া কোনো ভিডিও পাইনি। যারা এগুলো লিখেছে তাদের জিজ্ঞেসা করেন ভিডিও কোথায়।’
এছাড়া ভিকটিম দুই তরুণীর কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ছবি প্রকাশ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিকটিমদের মুখ ঝাপসা করে একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিনিয়তই পরিবারের কাছে হেয় হচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে তাদের ছবি কে আপলোড করেছে, তা খুঁজে বের করা হবে। বিষয়টি সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে অবহিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়ে অপরাপর বন্ধুদের সহায়তায় ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই তরুণী। ওই ঘটনার ৪০ দিন পর গত ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন তারা।
মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি হলেন- সাফাত আহমেদ,তার বন্ধু সাদমান সাকিফ ও নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ (রহমত আলী)।
পরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। আসামিদের মধ্যে সাফাত ও সাদমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অপর ৩ আসামি বিল্লাল, রহমত ও নাঈম আশরাফ পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন