রোজার মধ্যে ভোগান্তির কারণ হয়ে কেন মোবাইল কোর্ট
রমজানের প্রথম দিনই সড়কে নেমেছে মোবাইল কোর্ট। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সকাল ১১ টা থেকে পরিচালিত হয় অভিযান। এর ফলে সড়কে দেখা যায় যাত্রীবাহী গণপরিবহনের দীর্ঘ লাইন। বিআরটিএ পরিচালিত অভিযান নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজিত হাওলাদার জানান, ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও বর্ধিত ভাড়া আদায় বন্ধ, যানবাহনে সংরক্ষিত নারী আসন নিশ্চিত করা এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে।খবর চ্যানেল আই অনলাইনের।
যাহবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি, সঠিক কাগজপত্র না থাকা, অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জরিমানা করা হয় ২০ হাজার টাকা।
তবে যাত্রী ভোগান্তি করে কেন এই মোবাইল কোর্ট? এমন প্রশ্নের উত্তরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান: এটি তদের রুটিন ওয়ার্ক এবং এ অভিযান চলবে। যাত্রী ভোগান্তির জন্য নয়, বরং যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতেই তাদের অভিযান বলে দাবি করেন সুজিত হাওলাদার।
সরেজমিনে দেখা যায়, অভিযান চলার সময় এক ডজন বাস এবং মিনিবাস থামিয়ে কাগজ-পত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। যে বাসে সমস্যা নেই তারা চলে যেতে পারছে। জরিমানা দিয়েও যেতে পারছে বিভিন্ন গণপরিবহন। না হলে হেলপারকে রেখে গাড়ির চালককে যাত্রীদের নিয়ে যেতে দেয়া হচ্ছে।
জনগণের স্বার্থে এ মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হলেও তা নিয়ে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।কেউ কেউ এমন কার্যক্রমে সমর্থন জানালেও অনেকেই বলেছেন, দীর্ঘসময় গাড়ি আটকে রাখার কারণে তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
একটু কষ্ট হলেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট গৃহিনী রানু।
সায়েদাবাদ থেকে বলাকা পরিবহনে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে বড় মেয়ের বাসায় যাবেন তিনি । পথে তাদের বাস আটকে যাবার পর তিনি বলেন: আইন অমান্য করলে এমনটাই হওয়া উচিত। সঠিক কাগজপত্র ও ফিটনেস বিহীন অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারনে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।
ঠিক বিপরীত প্রতিক্রিয়া ছিল জয়নাল আবেদিনের।
‘রোজার মধ্যে কেন এমন যাত্রী ভোগান্তি?’ নিজেই প্রশ্ন করে তিনি বলেন, গাড়ি যখন যাত্রী নিয়ে রাস্তায় নামে তখন মোবাইল কোর্ট না করে যখন সকালে গ্যারেজ থেকে বের হয় তখনই ধরা উচিৎ। এভাবে গরমের মধ্যে রোজা রাখা মানুষজনকে আটকে রাখা খুবই অন্যায়।
শতাব্দী পরিবহন লিমিটেডের বাসচালক রনি আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন: এখন কেন মোবাইল কোর্ট? এই রোজার মধ্যে কেন? এক সপ্তাহ আগে করা যেতো না? রাত ১০ টার সময় অভিযান করা যায় না? গাড়িগুলো যখন গ্যারেজে থাকে চাইলে তখনও মোবাইল কোর্ট করা যায়।
‘শুধু শুধু এই যাত্রী ভোগান্তির কারণ কী?’ বলে প্রশ্ন রাখেন বাসচালক।
সকাল থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কারণে শতাব্দী পরিবহন, বলাকা পরিবহন, আজমেরি গ্লোরিসহ বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসগুলোকে দেখা যায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোন কোন বাস দেখা গেছে যাত্রীবোঝাই অবস্থায় । অনেক বাস আবার দীর্ঘসময় আটকে থাকার কারণে যাত্রীরা হেঁটে রওয়ানা হয়েছেন।
সব অভিযোগ শুনে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজিত হাওলাদার বলেন, পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ যাত্রী ভোগান্তি কমাতেই তাদের অভিযান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন