রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধান কী তা আমি জানি না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ নতুন করে আর একজন রোহিঙ্গাকেও নেবে না (আশ্রয় দেবে না) বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, এটা খুব কঠিন সময়। আমাদের পলিসি হচ্ছে আমরা আর একটাও রোহিঙ্গা নেবো না। কিন্তু আমরা তো ওদের মারতে পারি না।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষ দিনের চতুর্থ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

রোহিঙ্গারা আবারও বাংলাদেশে ঢুকছে- এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা খুব কঠিন সময়। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবস্থান নিয়েছে আমরা এদের নেবো না। কিছু কিছু (রোহিঙ্গা) যখন আসে তখন আমরা চেষ্টা করি তা ম্যানেজ করার।

তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমার সরকারকে বলেছি তোমরা তোমাদের লোকগুলোর একজন কেউ পাঠাবে না। কিন্তু (বিষয়টি) তাদেরও ক্ষমতার বাইরে। ওখানে সংঘাত হচ্ছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে ফেলছে, ভয়ে তারা (রোহিঙ্গারা) পালাতে চায়।

এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধান কী এখনো তা আমি জানি না। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে তারা অবশ্যই তাদের দেশে ফিরে যাবে। আমাদের এক নম্বর অবস্থান তাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

মিয়ানমার বলেছে তাদের লোকগুলোকে নিয়ে যাবে। কিন্তু আজ ছয় বছর চলছে একটা লোককেও তারা নেয়নি। তাদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব আছে, কিন্তু আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমার কাছে কোনো সমাধান নেই, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রবাসীদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখা যায় প্রবাসীরা দেশের বাইরে থাকার সময় তাদের বাড়িঘর বেদখল হয়ে যায়। দেশে ফিরে এসব সম্পদের দখল নিতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দেওয়া হয়। আমরা জেলা প্রশাসকদের বলেছি এ ধরনের ভুক্তভোগীদের আইনগত সহায়তা দিতে।

তিনি বলেন, প্রবাসীদের অনেক জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে রয়েছে। বিশেষ করে মন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকার কথা তুলে ধরে বলেন, সিলেটে এ রকম অনাবাদি জমির পরিমাণ বেশি। বেদখল হওয়ার আশঙ্কায় এসব জমি বর্গা দেওয়া হয় না। আমি জেলা প্রশাসকদের বলেছি সরকার যদি এখানে প্রকল্প করে তাহলে প্রবাসীরা জমি দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে বিদেশে গিয়ে অনেকে সমস্যায় পড়ছেন। আমরা জেলা প্রশাসকদের বলেছি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে। যাতে কেউ অবৈধভোবে বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের স্বীকার না হন।

তিনি বলেন, চুয়াডঙ্গা এবং বান্দরবানের কিছু এলাকায় ভারতের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। আমরা বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সময়ে এর সমাধান হবে।

এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, অনেক সময় ছোট ছোট উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে যা ওই অঞ্চলে বিশেষ প্রভাব ফেলছে। আমরা জেলা প্রশাসকদের বিষয়গুলো জানাতে বলেছি। যাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি প্রচার করা যায়। এতে দেশের ইজ্জত (সম্মান) বাড়ে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন শ্রমবাজার খুঁজছি। রোমানিয়া এবং লিবিয়াতে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে বিশেষ অগ্রগতি হয়েছে। রোমানিয়া ৩০ হাজার শ্রমিক নিতে চেয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসকদের বলেছি যাতে স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়। এছাড়া পাসপোর্টে হয়রানি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।