শরীরী মিলন নয়, আলিঙ্গন বা চুম্বন আপনার বেঁচে থাকার জন্যই একান্ত জরুরি, জানাল বিজ্ঞান
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে সবার আগে জানা প্রয়োজন, ঠিক কোন ক্রিয়াটি সম্পর্কের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে। বিশেষ করে রোম্যান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যখন ভাঙন অনিবার্য হয়ে ওঠে, তখন তাকে জোড়া লাগাতে ঠিক কোন আঠা ব্যবহার করা সাব্যস্ত, সে খবর কি আমরা রাখি? এবেলা.ইন-এর পাতাতেই কয়েক মাস আগে প্রকাশিত হয়েছিল প্রিয়জনকে বুকে টেনে নিন, আলিঙ্গনে জড়িয়ে রাখুন। সম্পর্ক টিকবে বহুদিন শীর্ষক প্রতিবেদনটি (ক্লিক করে আরও এক বার পড়ে নিতে পারেন), যেখানে মনোবিদ ফাহাদ বশিরের ‘দ্য সায়েন্স অফ ইমোশন’ বইটির অন্যতম উপজীব্য আলিঙ্গনকে তুলে ধরে দেখানো হয়েছিল, কী ভাবে আলিঙ্গন স্ট্রেস কমায়, ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগায় এবং সর্বোপরি আত্মবিশ্বাসকে পিরিয়ে আনে।
আলিঙ্গন যে সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণে কার্যকর একটি ক্রিয়া, সে কথা এই মুহূর্তে স্বীকার করছেন অর্ধেক ভূগোলের মানুষ। ইউরোপ ও মার্কিন দেশে এই মুহূর্তে দারুণ জনপ্রিয় ‘কাড্ল ক্লাব’ । নিরাপত্তাহীনতা, আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি, সম্পর্কে শীতলতা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে মানুষ হাজির হন এই সব ক্লাবে। এখানে একান্ত অপরিচিত ব্যক্তিরাও আলিঙ্গনের মাধ্যমে পরস্পরের কাছাকাছি আসেন। মনের ভিতরে জমতে থাকা মেঘগুলোকে বের করে দিতে পারেন সামান্য কিছু কসরতের মাধ্যমে। কেবল প্রেমবঞ্চিত মানুষই নন, এই ক্লাবে সামিল হয়েছেন বহু সংসারী নারী-পুরুষ। একাকীত্ব মেটানোর প্রয়োজন এক ছাদের নীচে সমবেত করে চলেছে অসংখ্য মানুষকে।
কেবল কাডল ক্লাব নয়, ইউরোপ আর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এই মুহূর্তে দারুণ জনপ্রিয় কাডল ওয়ার্কশপ ও কাডল পার্টি। কীভাবে জড়িয়ে ধরতে হবে, কখন আলিঙ্গন করতে হবে, আলিঙ্গনের পরবর্তী ক্রিয়াগুলি কী, এই সব বিষয়ের চর্চাই এই ক্লাব, পার্টি বা ওয়ার্কশপের উপজীব্য। বিনামূল্যে নয়, রীতিমতো অর্থের বিনিময়ে মানুষ ‘কাড্ল’ বা ‘হাগ’-এর শিক্ষা নিতে সামিল হচ্ছেন এই সব কর্মকাণ্ডে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, লন্ডেনের একটি কাডল ক্লাব আয়োজিত কর্মশালায় অংশ নিতে মাথাপিছু ২৪ পাউন্ড প্রদান করতে হয়। কেবল কাড্ল বা হাগ নয়, এখানে চুম্বনের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। আলিঙ্গন বা চুম্বন কেবল যৌনক্রিয়ার অনুষঙ্গ নয়, এ কথা এই ক্লাবের কর্মকর্তারা স্পষ্টই জানান। আবসাদকে কাটাতে চুম্বনের চাইতে ভাল দাওয়াই আর হতে পারে না, এমনই মত তাঁদের।
সাইকোথেরাপিস্ট ডায়ানা পার্কিনসন জানিয়েছেন, প্রকৃতির নিয়েমেই রয়েছে এই ক্রিয়াগুলি। মানবেতর জীবদের মধ্যেও আলিঙ্গনের প্রবণতা বিদ্যমান। কেবল ‘সভ্যতা’-র প্রকোপে পড়েই মানুষ এই প্রকৃতিক ক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
আলিঙ্গন, চুম্বন বা আরও কিছু ক্রিয়া, যাদের সাধারণত যৌন অনুষঙ্গে ভাবা হয়, তাদের বিচার করা প্রয়োজন অন্যভাবে। এই ক্রিয়াগুলি মানুষকে বাঁচতে শেখায়। মানসিক শান্তির পথ দেখায়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন