শর্মিলা ঠাকুর ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে আজ অংশ নেবেন
বেশ জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২১’। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’- শ্লোগান নিয়ে ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এ আসর। চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এবারের আসরটি উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি।
এই উৎসবে বিশ্বের মোট ৭৩টি দেশের ২২৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। চলচ্চিত্র নিয়ে বিশাল এই যজ্ঞে আজ ২০ জানুয়ারি অংশ নেবেন ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। উপমহাদেশের কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আজ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে একটি বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। ‘সত্যজিৎ রায় : জাতীয় ও বৈশ্বিক’ শিরোনামের মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জনাব মফিদুল হক।
এই সেমিনারে বরেণ্য অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, এমপির সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত সিনেমা ‘অপুর সংসার’র অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। তবে তিনি অংশ নেবেন অনলাইনে। স্বশরীরে বাংলাদেশে এসে এই চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয়ার ইচ্ছে থাকলেও করোনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভার্চুয়ালেই তিনি এই উৎসবে যোগ দেবেন।
শর্মিলা ঠাকুর তার অভিনয় জীবন শুরু করেন সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় কালজয়ী সিনেমা ‘অপুর সংসার’ দিয়ে। এ সিনেমায় তিনি প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেন। শর্মিলা এরপর ক্যারিয়ারে বহু সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে কিংবদন্তিতে পরিণত করেছেন। পেয়েছেন দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।
এদিকে ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২১’র অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় দিরব্যাপী সেমিনার ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’। পশ্চিমা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দেশের নির্মাতাদের একটি যোগসুত্র তৈরি এবং বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অবস্থান আরো দৃঢ় করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিনিযোগের কৌশল তৈরি এই সেমিনারের মূল উদ্যেশ্য। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজনে ৩য় ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’ সেমিনার এটি।
সকালে সেমিনারের শুরুতে প্রথম সেশনে ভারত থেকে যোগ দেন বার্লিন উৎসবের প্রোগ্রামার, চলচ্চিত্র সমালোচক এবং সাংবাদিক মীনাক্ষী শেড্ডি। নবাগত চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং পরিচালকদের জন্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর প্রারম্ভিক পর্যায়ের বিভিন্ন ধাপ তুলে ধরেন তিনি। উৎসবগুলোর কৌশল, আন্তঃপরিকল্পনা, নির্মাতাদের সহযোগিতার জন্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্বব্যাপী কিছু প্রতিষ্ঠান এবং সেসব প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কিভাবে ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং পরিচালক হওয়া যায়, চলচ্চিত্র সম্পর্কিত বৈশ্বিক বিনিয়োগ কিভাবে পাওয়া যায়, এশিয়ার বিভিন্ন উৎসবে কিভাবে চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়- এসব বিষয়ে কথা বলেন শেড্ডি।
পরে চলচ্চিত্রের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কথা বলেন ‘জি ফাইভ’র নির্বাহী অনিন্দিতা চৌধুরী। তার আলোচনায় উঠে আসে কিভাবে বর্তমান ফিল্ম মেকাররা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।
সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা মনে করেন, বিশ্বায়নের এই সময়ে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যর ব্যবধান খুব দ্রুত কমে আসছে। গত বছরে কোরিয়ান চলচ্চিত্র ‘প্যারাসাইট’র অস্কারে জয়জয়কার তার উদাহরণ। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতাদের সামনে তাই অবারিত সুযোগ বিশ্বকে জয় করার । ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এই বিশ্বজয়ের এক শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন তারা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন