শিবিরের সংবিধান সকল ধর্মের জন্য রচিত: ইবি শিবির সভাপতি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান অমুসলিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘শিবিরের সংবিধান নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের জন্য নয় সকল শিক্ষার্থীর জন্য রচিত হয়েছে। আমাদের সংবিধানের প্রতিটি অনুচ্ছেদ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে গড়া। আপনারা আপনাদের আদর্শ প্রচার করেন, আমরা আমাদের আদর্শ প্রচার করি। আমাদের আদর্শ যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে ওয়েলকাম। ইসলাম কখনো কোন ধর্মাবলম্বীদের ওপর জোর প্রদান করে না।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে অমুসলিম ছাত্রদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে শাখা ছাত্রশিবির।

মতবিনিময় সভায় শাখা শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্র শিবিরের সভাপতির কক্ষ শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, মুসলিম-অমুসলিম সকল শিক্ষার্থীর জন্যই উন্মুক্ত। যেকেউ যেকোনো প্রয়োজনে আসতে পারবেন। আমরা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা করার চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব আপনাদের ধর্মীয় ছুটির দিনে যেন কোনো বিভাগ কিংবা অন্য কারো প্রোগ্রাম না রাখে’

সভায় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলীর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির অফিস সেক্রেটারি রাশেদুল ইসলাম রাফি, অর্থ সম্পাদক শেখ আল আমিন, ইবি পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ পংকজ রায়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক অমুসলিম শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন শিবির সভাপতি। পরে তাদের মাঝে খাবার ও বই উপহার দেয় সংগঠনটি।

মতবিনিময় সভায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীসহ বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরা মতামত তুলে ধরেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘পাহাড়ের মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আলাদা সংস্কৃতি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। অন্য হলগুলোতে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা কক্ষ বরাদ্দ থাকলেও শেখ রাসেল হলে কোনো কক্ষ বরাদ্দ নেই। আপনারা প্রশাসনকে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনায় রাখার জন্য অনুরোধ করবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি।’

হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সকল ধর্মের মানুষের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত। রমজান মাসে হলগুলোতে রান্না করা হয় না। ক্যাম্পাসের বাইরেও তা পাওয়া কষ্ট হয়ে যায়। দেখা যায় যে, যে উপকরণ গরুর মাংসে ব্যবহার করা হচ্ছে একই উপকরণ মুরগি, মাছ বা তরকারিতে ব্যবহার করা হয়। এটি আমাদের সমস্যা হয়ে দাড়ায়। কারণ এটি সংবেদনশীল বিষয়।’