আমাদের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী বিউটি কুইন শাবানার জন্মদিন শনিবার (১৫ জুন)। ১৯৫২ সালের এইদিনে চট্টগ্রামের রাউজানে জন্ম। বাবা ফয়েজ চৌধুরী ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক। স্বামী ওয়াহিদ সাদিক একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক। বর্তমানে তিনি সপরিবারে আমেরিকার নিউজার্সিতে বসবাস করছেন। আওয়ার নিউজ বিডি পরিবারের থেকে শুভ কামনা রইল তাঁর এই শুভ জন্মদিনে। শুভ জন্মদিন।
শিশু বয়সেই চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রাম ছেড়ে চলে আসেন ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। সেখানে গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ভর্তি হলেও মাত্র ৯ বছর বয়সে তার শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটে।

১৯৬২ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শাবানা। ওই সময় তার পর্দায় নাম ছিল রত্মা। এরপর তালাশ-সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় নৃত্যশিল্পী ও অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। সহ-নায়িকা হিসেবে ‘বনবাসে রূপবান’ ও ‘ডাক বাবু’ সিনেমায় দেখা গেছে তাকে।

১৯৬৭ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘চকোরী’ সিনেমায় নাদিমের বিপরীতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন শাবানা। তখন রত্মা থেকে তিনি হয়ে যান শাবানা। বাংলা ও উর্দু ভাষায় নির্মিত ‘চকোরী’ ব্যবসাসফল হয়। এরপর শাবানাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

তিন দশকের ক্যারিয়ারে নাদিম, রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, জসীম, সোহেল রানার সাথে জুটি বেঁধে শাবানা উপহার দেন জনপ্রিয় অনেক সিনেমা। শাবানা অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো- ভাত দে, অবুঝ মন, ছুটির ঘণ্টা, দোস্ত দুশমন, সত্য মিথ্যা, রাঙা ভাবী, বাংলার নায়ক, ওরা এগারো জন, বিরোধ, আনাড়ি, সমাধান, জীবনসাথী, মাটির ঘর, লুটেরা, সখি তুমি কার, কেউ কারো নয়, পালাবি কোথায়, স্বামী কেন আসামি, দুঃসাহস, পুত্রবধূ, আক্রোশ ও চাঁপা ডাঙার বউ।

অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এই কিংবদন্তী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার ও কথক একাডেমি পুরস্কার। এছাড়া বাংলাদেশের হয়ে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন শাবানা।

১৯৭৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। দুজনে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন প্রযোজনা সংস্থা এসএস প্রোডাকশন। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা। ব্যক্তিজীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলের মা শাবানা।

১৯৯৭ সালে শাবানা হঠাৎ করেই অজানা কারণে বিদায় জানান চলচ্চিত্রাঙ্গন। ২০০০ সাল থেকে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে বসবাস করছেন শাবানা। এরপর বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে আসলেও জনসম্মুখে দেখা যায়নি এ অভিনেত্রীকে।