শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার মূল হোতা হাশিম নিহত
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় ইস্টার সানডেতে বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী জাহরান হাশিম নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।
শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, সিরিসিনা শুক্রবার বলেছেন, উগ্রপন্থী ধর্মপ্রচারক জাহরান হাশিম কলোম্বোর সাংরি-লা হোটেলে নিহত হয়েছেন।
তিনি দাবি করেন, ‘ইলহাম নামে আরেকজনকে নিয়ে হাশিম জনপ্রিয় পর্যটন হোটেলটিতে আত্মঘাতী হামলা চালায়।’
গত ২১ এপ্রিল কলম্বোর তিনটি অভিজাত হোটেল ও গির্জায় বোমা হামলায় ২৫৩ জন নিহত ও ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
শুরু থেকে নিহত ৩৫৯ জন বলা হলেও শুক্রবার শ্রীলঙ্কার সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, গণনায় ভুল ছিল, নিহত হয়েছে ২৫৩ জন।
লঙ্কান প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে- জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, এমন অন্তত ১৩০ জন সন্দেহভাজন শ্রীলঙ্কায় রয়েছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ৭৬ জনকে আটক করেছে। আরও ৭০ জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।
তবে, হাশিম সাংরি-লা হোটেলে বোমা হামলায় কী ভূমিকা পালন করেছিলেন, সে সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা পরিষ্কার করে কিছু বলেননি।
শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষ এই হামলার জন্য স্থানীয় উগ্রপন্থী ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতকে (এনটিজে) দায়ী করেছে।
জাহরান হাশিম কয়েক বছর আগে উগ্রপন্থী ধর্মপ্রচারক হিসেবে স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। ইউটিউব এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে বিধর্মীদের নিন্দা করে বেশকিছু ভিডিও পোস্ট করার পর তিনি স্থানীয় মহলে পরিচিতি পান।
ওই ভিডিও এলাকার কিছু মুসলমানকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। কারণ, বৌদ্ধ-প্রধান শ্রীলঙ্কায় মুসলিমরা সংখ্যালঘু।
স্থানীয় মুসলিম নেতারা বলছেন, তারা তাদের উদ্বেগের কথা কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছেন। কিন্তু, তারা ব্যাপারটা আমলেই নেয়নি।
হাশিমের বোন জানান, মুসলিমদের একাংশের কাছে তার ভাই খুবই জনপ্রিয় ছিলেন কট্টরপন্থী মতাদর্শের কারণে। মূলধারার মুসলিম সংগঠনগুলো তার উগ্র মতাদর্শের কারণে হাশিমকে তাদের জমায়েতে কথা বলতে না দেয়ায় তিনি নিজেই কাত্তানকুডিতে ন্যাশানাল তৌহিদ জামাত নামে সংগঠন গড়ে তোলেন।
সমুদ্রের ধারে একটা মসজিদও তৈরি করেন হাশিম। তার বিতর্কিত বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা সামাজিক মাধ্যমে উঠে আসার পর এনটিজে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। কিন্তু, গোপন স্থান থেকে উস্কানিমূলক ভিডিও প্রকাশ হাশিম অব্যাহত রেখেছিলেন।
তার গড়ে তোলা সংগঠনের সঙ্গে তার যোগযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল কিনা তা নিয়ে স্থানীয়রা অবশ্য সংশয় প্রকাশ করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন