সংসদে বিএনপি সদস্যদের বক্তব্য কী প্রভাব রাখছে?
বিএনপি মনোনীত সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য রুমিন ফারহানার সংসদে একটি বক্তব্য নিয়ে মূলত ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
মিস ফারাহানা তার বক্তব্যের শুরুতেই যখন বলেন যে এই সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তখন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা ব্যাপক শোরগোল শুরু করেন।
পর্যেবক্ষকরা বলছেন, বহু বছর ধরে বাংলাদেশের সংসদে এ ধরণের চিত্র অনুপস্থিত।
বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের পর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে কার্যত কোন বিরোধী দল ছিলনা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, এবার বিএনপির কয়েকজন সদস্য সংসদে থাকায় সংসদ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহিউদ্দিন আহমদ।
মি: আহমদ বলেন, “এতোদিন তো আমরা জানতাম বা বলাবলি হতো যে গৃহপালিত বিরোধী দল। এবার বিএনপির ছয়জন যোগ দেয়াতে এরা একটা মাঠের প্রকৃত বিরোধী দল এদের পারসেপশান আছে। অল্প কয়েকজন সদস্যও যে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারেন এবং চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেটার আমরা প্রমাণ দেখলাম।”
বিএনপির যে দুজন সদস্য সংসদে বক্তব্য রেখে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন তাদের একজন রুমিন ফারহানা এবং অপরজন চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ।
বিএনপি নেতারা এরই মধ্যে বলেছেন, সংসদে তাদের এমপিরা কথা বলতে গিয়ে যে ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন, সে বিষয়টি তারা সবার সামনে উন্মোচন করতে চেয়েছেন সংসদে যোগ দেবার মাধ্যমে।
রুমিন ফারহানা বলছেন, এর মাধ্যমে তার ভাষায় সরকার দলীয় সদস্যদের অসহিষ্ণুতা প্রকাশ পাচ্ছে।
“আমাকে লড়তে হচ্ছে ৩৪০ জন সদস্যের বিরুদ্ধে। ছয় বছর কার্যত বিরোধীদল না থাকার ফল এটাই হয়েছে যে সরকার এখন ন্যূনতম সমালোচনাও শুনতে পাচ্ছে না। সরকারি দলের সদস্যদের অসহিষ্ণুতা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে,” বলছিলেন রুমিন ফারহানা।
পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, সদস্য সংখ্যা যাই হোক না কেন, বিএনপি সংসদে যোগ দেবার ফলে ভিন্ন এক সংসদ দেখা যাচ্ছে যেটি ২০১৪ সাল থেকে অনুপস্থিত ছিল।
সংসদে বিএনপি দলীয় কয়েকজন যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, সেটিকে কিভাবে দেখছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যরা?
আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি মাহবুব আরা গিনি বলেন, “কেউ যদি এসে অসত্য বলে, বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে, সেটা প্রতিবাদ তো অন্য দল করতেই পারে। তাই না? বিরোধী দল কিন্তু আগে ছিল। জাতীয় পার্টি যেখানে মনে করেছে সেখানে সরকারের সমালোচনা করেছে। বিএনপি থাকাতে যেসব হইচই হাই-কাউ হতো সেটা বন্ধ ছিল বলে অনেকে এটাকে ইন্টারেস্টিং মনে করেন নাই।”
“তারা সেসব অসত্য কথা সংসদে বলছে, এবং সেটার প্রতিবাদ হচ্ছে, তাতে হয়তো মনে হচ্ছে যে এটা হয়তো জমজমাট সংসদ হচ্ছে। অসত্য বিবৃতি দেয়া ছাড়া তারা কাজের কাজ কিছুই করছে না,” বলছিলেন মাহবুব আরা গিনি।
এই সংসদ সবে মাত্র মাত্র ছয়মাস অতিক্রম করেছে। বিএনপির সদস্যরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতেও তারা দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি বারবার তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারের অনিয়মগুলোও জোরালোভাবে তুলে ধরবেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন