সরকারকে গায়ের জোরে কেউ হঠাতে পারবে না : ওবায়দুল কাদের
সরকারকে গায়ের জোরে কেউ হঠাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে
স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকালে শহীদ ডা. মিলন হলে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি।
এসময় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ বর্তমানেও শান্তি সমাবেশ করছে, উন্নয়নের সমাবেশ করছে। জনগণের জান মাল রক্ষার্থে রাজপথে আছে। আওয়ামী লীগ দেশ ও স্বার্থেই এ ধরণের কর্মসূচী পালন করছে। দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা জনগণের কাছে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। দেশের ৭০ শতাংশ জনগণ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাম পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারা অনুপ্রাণিত। শেখ হাসিনা যা বলেন তাই করেন এবং দেশবাসী তা বিশ্বাস করেন।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে সরকার অত্যন্ত মানবিক। শেখ হাসিনাও মানবিক। তবে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, বিএনপি ব্যস্ত বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে রাজনীতি করতে। তিনি বিএনপির আইনজীবীদের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি দায়িত্বশীলতার সাথে সঠিকভাবে কাজ করলে তার মামলাগুলো হয়তো অনেক আগেই নিষ্পত্তি হয়ে যেতো।
বাংলাদেশের বিষয়ে অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে দেয়া ভারতের বিবৃতি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের,এমপি বলেন, ওই বিবৃতির পর বিএনপিকে ভারতভীতি পেয়ে বসেছে। তবে ভারত কখনই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে নি এবং করবেও না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমানে বিশ্বটাই ওলট পালট হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ দাবানলে পুড়ছে। ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যে সব দেশ মানবাধিকার রক্ষার কথা বলে বেড়ায় তারা নিজেরা প্রকৃতপক্ষে কতটা মানবাধিকারে বিশ্বাসী তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইউক্রেনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে অস্ত্র সরবরাহ করছে, অন্যদিকে সুদানে, সোমালিয়ায় মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে সেদিকে কোনো খেয়াল নাই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নির্বাচন হয়েছে, আগামীতে হবে, তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই অথচ বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিদেশীরা দাওয়াত ছাড়াই চলে আসছেন। বাংলাদেশে পান থেকে চুন খসলেই তারা তৎপর হয়ে উঠে। অথচ নিজের দেশে পাবলিক প্লেসে মানুষ মেরে ফেলছে তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।
সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদ এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণে আমরা বাংলাদেশ অর্জন করতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন বঙ্গবন্ধুরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিনি ক্ষমতায় আছেন বলেই বাংলাদেশে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল চালু হয়েছে। আপনারা সবাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন, যাতে করে জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী লাভ করেন, সুস্থ থাকেন এবং বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারেন। একই সাথে আমাদের একথা স্মরণে রাখতে হবে, বর্তমানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। তারা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। আসুন আমরা দেশবাসীকে সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপি-জামায়াত জোটসহ দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিয়ে বাংলাদেশের দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়ার পথকে গতিশীল রাখি। উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে চিকিৎসক সমাজকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে অত্যন্ত এক কঠিন সময়েও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন শুরু করেছিলেন এবং পরবর্তীতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে অভাবনীয় উন্নতি ও সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলালের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিএমএ এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমআরসি এর সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সাবেক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাব্লিউ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব ডা. কামরুল হাসাল মিলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ, সহকারী প্রক্টর ডা. মোঃ সামিউল আলম বিন্তু, নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট খালেদা আক্তার, সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী কল্যাণ পরিণষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল ইসলাম, চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লোকমান মিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, অফিস প্রধানগণ, শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুব ও সুব্রত বিশ্বাস। ছবি: মোঃ আরিফ খান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন