‘সরকারের চোখে বিএনপির মৃতরাও নাশকতাকারী’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার প্রতিহিংসাবশত বিএনপির মৃত এবং দেশের বাইরে অবস্থানকারী নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিয়েছে। পুলিশও নাকি তাদের নাশকতা ও গোপন বৈঠক করতে দেখেছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মূলত নির্বাচন থেকে বাইরে রাখতেই সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলা দিয়েছে।’
এ সময় তিনি জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিন হাজারের অধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপির ২ লাখ নেতাকর্মীকে। আর গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মীকে। সরকার সারাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতিসংঘ সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের মহাসচিব জাতিসংঘে গিয়েছিলেন, আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট গেছেন। নিশ্চয়ই এটা প্রধানমন্ত্রীকে কোনো না কোনোভাবে আঘাত করেছে, হতাশ করেছে। এজন্যই তিনি এসব কথা বলেছেন।’
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপিকে জাতিসংঘ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তারা নিজেরাই সেখানে গেছে। আসলে বিএনপি মিথ্যাচারে চ্যাম্পিয়ন।’
ড. কামাল হোসেনদের জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বহুআগে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, সরকারের পদত্যাগ ও ভোটের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছেন। এখন ২০ দলের বাইরের রাজনৈতিক শক্তি, দল, সংগঠন ও ব্যক্তিরাও একই দাবি করছেন। আমাদের সঙ্গে তারা একমত পোষণ করায় আমরা খুশি, অত্যন্ত আনন্দিত। এটি এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।’
জামায়াত ছাড়া বিএনপিকে জাতীয় ঐক্য করতে হবে— যুক্তফ্রন্টের এমন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কথা আমরা এখনো শুনিনি। আর যুক্তফ্রন্ট শনিবার যে ৫ দফা দিয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরা এখনো আলোচনা করিনি। দলীয় ফোরামে আলোচনার পর এ নিয়ে মন্তব্য করব।’
খালেদা জিয়া চিকিৎসা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ বলেন, ‘দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক না রেখে যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, তাতে আমরা হতাশ হয়েছি। এ বোর্ডের পরামর্শে বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। দেখা করতে গেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক রাখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু, পরে তিনি তার কথা রাখেননি।’
খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কখনো সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। তাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই— মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়ে তার নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন