সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিলো না রেইনট্রি কর্তৃপক্ষ
আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করলেও সাংবাদিকদের বেশিরভাগ প্রশ্নেরই কোনও উত্তর দেয়নি দ্য রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ। মৌখিকভাবে তাদের বক্তব্য জানানোর পর সাংবাদিকদের হাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি ধরিয়ে দিয়ে এতেই তাদের বক্তব্য লেখা আছে বলে অনুষ্ঠান শেষ করে তারা। এসময় ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদনান হারুন শুধু বলেন, ‘তারা তাদের বক্তব্য সাংবাদিকদের কাছে প্রেস রিলিজ আকারে দিয়েছেন, আর কোনও বক্তব্য তাদের নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে আদনান হারুনের বক্তব্যের পর সাংবাদিকরা তার কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে ‘আপনাদের জন্য রিফ্রেশমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে’ বলে তিনি আসন থেকে উঠে যান। একই সঙ্গে উঠে যান হোটেলটির মহাব্যবস্থ্যাপক ফ্রাঙ্ক ফরগেট, হোটেলের ইন্টার্নাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ ফারজান আরা রিমি এবং এই গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক রাজা গোলাম মোস্তফা।
আজ ১৬ মে সকাল ১১ টায় সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে হোটেল রেইনট্রি কর্তৃপক্ষ। গত ২৮ মার্চ দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় হোটেলটির নাম আলোচনায় উঠে আসে। শুরু থেকেই এ হোটেলের আচরণ ছিল রহস্যজনক। সাংবাদিকদের অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তরে তারা বিষয়টি তদন্তাধীন বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন প্রশ্নে আদনান হারুন বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতেই এ সাংবাদিক সম্মেলন। তাদের দেওয়া প্রেস রিলিজের বাইরে আর কোনও বক্তব্য তাদের নেই। এদিকে, গত ৯ এপ্রিল হোটেলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলেও তার আগেই হোটেলে এ ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ পেলে প্রশ্ন ওঠে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে কী করে হোটেলে অতিথি অ্যালাউ করা হয়।
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে আদনান হারুন বলেন, শাফাত আহমেদের নামেই হোটেলের ৭০০ ও ৭০১ নম্বর স্যুইট ভাড়া নেওয়া হয়। সেদিন রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত হোটেলের মহাব্যবস্থাপক হোটেলে অবস্থান করলেও তিনি অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি।
অপরদিকে, ধর্ষণ ঘটনার প্রধান আসামি শাফাত আহমেদের সঙ্গে হোটেলের পরিচালক মাহির হারুনের বন্ধুত্বের বিষয়টিও তারা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, হোটেলের নিয়ম অনুযায়ী হোটেল অতিথি বিশেষ দিনকে উপলক্ষ করে তাদেরকে হোটেলের তরফ থেকে কেক ও ফুলের ব্যবস্থা করা হয়। শাফাত আহমেদের জন্মদিনেও তাই করা হয়েছে। মাহির হারুনের সঙ্গে শাফাতের কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই।
সেদিন জন্মদিনের অনুষ্ঠান হোটেলে ছাদে কতোসময় ধরে চলছিল এবং হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সেখানে যাওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে আদনান হারুন চুপ থাকেন। কতো সময় অনুষ্ঠান চলেছে আবার প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন, এ বিষয়ে তারা কোনও কথা বলবেন না। তিনি বলেন, হোটেলে কোনও অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কীনা সেটি আদালতে প্রমাণিত হবে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটি তদন্ত করছে, এটি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে আগে দাবি করলেও আজ কেন বলা হচ্ছে ঘটনাটি ঘটেছে প্রশ্ন করলেও তিনি কোনও জবাব দেননি।
ঘটনার পরদিন দুই শিক্ষার্থী আসামিদের সঙ্গে হাসতে হাসতে বেরিয়েছেন বলে আগে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, এখন এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য কী জানতে চাইলেও কোনও উত্তর দেননি আদনান হারুন। তিনি পাল্টা করে কোন কর্তৃপক্ষ এমন কথা বলেছে জানতে চাইলে তাকে সেখানে উপস্থিত হোটেলের ইন্টার্নাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ ফারজান আরা রিমির কথা জানালে তারা দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে থাকেন এবং বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন, তারা এবিষয়ে কথা বলবেন না।
তাহলে কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কেন সাংবাদিক সম্মেলন করছেন প্রশ্ন করলে তিনি তড়িঘড়ি আপনাদের জন্য রিফ্রেশমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখেই উঠে চলে যান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন