সাংবাদিকদের যে কারণে ‘স্যার’ ডাকলেন ডমিঙ্গো
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজে বাংলাদেশের কোচের পদে তিনি থাকবেন কিনা তা নিয়ে জোর গুঞ্জন ছিল। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্পের মতো শেষ হয়েও যেন হইল না রাসেল ডমিঙ্গোর বাংলাদেশ অধ্যায়। ছুটি কাটিয়ে পুরনো ঢেরায় ফিরে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে অচেনা ডমিঙ্গোরই দেখা মিলল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর থেকেই অনেকটা নড়বড়ে ছিল বাংলাদেশ হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর গদি। শেষমেশ নিউজিল্যান্ড সফর শেষে নতুন করে আলোচনায় ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান এ কোচ। এমনকি সিরিজ শেষে নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পথ ধরায় অনেকে এমনও বলাবলি শুরু করেছিলেন এ বুঝি তার শেষ যাওয়া!
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তরফে সব গুঞ্জনে পানি ঢেলে বারবার বলা হয়, আপাতত ডমিঙ্গোই থাকছেন। এ ছাড়া ডমিঙ্গোকে প্রধান কোচের পদে রেখেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজের পরিকল্পনা সাজায় বিসিবি। শেষমেশ ঘরের মাঠে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের আগে ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশে পা রাখেন ডমিঙ্গো। যদিও ভেতরে ভেতরে ডমিঙ্গোর বিকল্প খোঁজা হচ্ছে ঠিকই।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় ওয়ানডেকে সামনে রেখে রাসেল ডমিঙ্গো সংবাদ সম্মেলন শুরু করেছিলেন হাসিমুখেই। তবে অর্ধেক গড়াতে সেই হাসি উবে গেল প্রচ্ছন্ন উপহাসে। উপস্থিত সাংবাদিকরাও যেন চিনতে পারছেন না এমন মেজাজের ডমিঙ্গোকে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা গণমাধ্যমকর্মীদের একপর্যায়ে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতে থাকেন তিনি।
সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমে ব্যর্থ লিটন দাস। তবে টেস্টে মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে বেশ সফল বাঁহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। আর তাই ডমিঙ্গোর কাছে জানতে চাওয়া হয় লিটনকে নিয়ে কোনো ভাবনা আছে কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না।
উল্টো সাংবাদিককে উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা সর্বশেষ সিরিজ কোথায় খেললাম? জিম্বাবুয়েতে। সেখানে সে একটা সেঞ্চুরি করেছিল। কয় ম্যাচ হলো? ২-৩ ম্যাচ! হ্যাঁ ঠিক তাই! আপনার কাছেই উত্তর আছে স্যার!’
সংবাদ সম্মেলনের আগে ঐচ্ছিক অনুশীলনে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে বেশ কথাবার্তা হয়েছিল হেড স্যার ডমিঙ্গোর। কী নিয়ে কথা হলো জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আপনাকে বলার মতো নয় স্যার। এটা আমার ও খেলোয়াড়ের মধ্যকার কথাবার্তা, আপনাকে জানানোর মতো তথ্য নয় স্যার।
শুধু এটাই নয়, অভিষিক্ত ইয়াসিরের পজিশন নিয়ে প্রশ্ন করা সাংবাদিককেও স্যার বলে সম্বোধন করেন ডমিঙ্গো। সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, বিপিএলে ফিনিশারের ভূমিকায় খেলে সফল হওয়া ইয়াসিরকে কেন উপরে খেলানো হলো। জবাবে টাইগার কোচ বলেন, কোন দলের হয়ে ফিনিশারের ভূমিকায় ছিল স্যার? বিপিএলে? টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে এখানে অনেক ভিন্নতা আছে স্যার।
তবে ডমিঙ্গোর এমন স্যার স্যার সম্বোধন শুরু হয়েছিল তার পদ নিয়ে প্রশ্ন করার পর থেকেই। বাংলাদেশে তার চাকরি নড়বড়ে। যে কোনো মুহূর্তে চলে যেতে পদ। তবে এতকিছুর পরও যেন কীভাবে তিনি টিকে যাচ্ছেন। আর তাই জানতে চাওয়া হয়, বারবার চাকরি বেঁচে যাওয়ায় তিনি নির্ধারিত চুক্তির মেয়াদ শেষ করা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কি না।
জবাবে ডমিঙ্গো বলেন, এটা বিসিবির ব্যাপার স্যার। যদি আত্মবিশ্বাসী হতে হয় তাহলে তো আন্তর্জাতিক দলকে কোচিং করাতে পারব না। গণমাধ্যম ও মানুষ যা বলে, আমি তাতে মেজাজ হারাতে পারি। কিন্তু এটা করা জরুরি নয়। আপনাদের কাজ এটা, আপনারা আমাকে বা খেলোয়াড়দের নিয়ে যা খুশি লিখতে পারেন। আমি সেটা খেলোয়াড়দের থেকে দূরে রাখি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন