সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও মহিলাসহ আটক ৩

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে গ্রিল কেটে নিয়ে যাওয়া চোরাই ১টি পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ চোর চক্রের সহায়তা করার অপরাধে ৫টি বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল জনগণের সহায়তায় জব্দ করে ১ মহিলাসহ ৩ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে এলাকাবাসী।

পুলিশের হাতে আটককৃতরা হলো উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের বাবুল গাজীর স্ত্রী মাহফুজা বেগম (২৫) গ্যারেজ মালিক রঘুনাথপুর সানা পাড়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র রফিকুল ইসলাম( ৪০) এবং তার সহযোগী কালিকাপুর গ্রামের খলিল মোড়লের পুত্র ইকবাল হোসেন(৪২)।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার সময় উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে বাবুল গাজীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটলেও মূল হোতা ডাকাত সদ্দার নুরুল এবং তার সহযোগী শাহিন মোড়ল( ৪০) পালিয়ে যায়।

ওই সময় কালিকাপুর গ্রামের কাওসার আলী গাজীর পুত্র ভাটা শ্রমিক বাবলু গাজী বাড়িতে না থাকার সুযোগে চোর চক্রকে সহায়তা করার অপরাধে তার স্ত্রী মাহফুজা খাতুনকে(২৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই কাজে মোটরসাইকেল ভাড়া দিয়ে সহযোগিতা করার অপরাধে রঘুনাথপুর গ্রামের সানাপাড়ার গ্যারেজ মালিক রফিকুল ইসলামের ভাড়া মোটরসাইকেল গ্যারেজে হানা দিয়ে চোরাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ৪টি মোটরসাইকেল সহ অপর সহযোগী ইকবাল হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

ওইসময় তার গ্যারেজ হতে কালো রংয়ের ১৫০ সি,সি ১টি পালসার মোটরসাইকেল, লাল রঙের১ টি হিরো হোন্ডা স্প্লেন্ডার, ১ টি, ব্লু রংয়ের অ্যাপাচি গাড়ি১টি সহ কাগজপত্র বিহীন ৪টি গাড়ি জব্দ করে পুলিশ।

সরে জমিনে শুক্রবার দুপুর ১২ টার সময় ঘটনাস্থলে গেলে নলতা শরীফ গ্রামের আমিনুর, কালাম, জহুর, মধু ও কৃষ্ণনগর গ্রামের শহিদুল, ইলিয়াস হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানায় চম্পাফুল ইউনিয়নের বিষ্ণুপদ মন্ডলের পুত্র বরুন মন্ডল (৪০) স্ত্রী পরিবার-পরিজন নিয়ে নলতা কলেজের সামনে মোশারফ এর ফ্লাট বাড়িতে ভাড়া থাকতো। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১১ টার সময় বাসার গ্রিল কেটে ১টি কালো রংয়ের ১৫০ সিসি পালসার মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্যরা চুরি করে নিয়ে যায়। পরে সি,সি, ক্যামেরার ছবি দেখে চোর শনাক্ত করে ওই রাতেই তারা বিভিন্ন এলাকা ভোর সাড়ে ৪টার সময় কালিকাপুর গ্রামের দলিল উদ্দিন মোড়লের পুত্র চোর চক্রের শাহিনের বাড়িতে হানা দেয়। ওই সময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে শাহীন ভো দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পাশের বাড়ি বাবুল গাজীর বাড়িতে চোরাই মোটরসাইকেল দেখতে পায়। ওই সময় তারা স্থানীয়দের সহায়তায় আটকে রেখে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে থানা হতে উপরিদর্শক আব্দুর রহিম এবং নকিব হোসেন পান্না ঘটনা স্থল হতে মোটরসাইকেল উদ্ধার সহ গৃহকর্তা বাবুল গাজী বাড়ি না থাকায় তার স্ত্রী মাহফুজা বেগমকে আটক করা হয়। তবে ওই সময় তার স্বামী ভাটা শ্রমিক বাবুল গাজী বরিশাল ভাটা হতে সকালে বাড়ি এসেছে বলে জানায়।

পুলিশ মাহফুজা বেগমের দেওয়া তথ্য মতে গ্যারেজ মালিক রফিকুল ইসলামের ভাড়া গ্যারেজ থেকে ঐদিন চোর চক্রের হোতা শাহিনের চোরাই কাজে ব্যবহারের জন্য দেওয়া ভাড়া মোটরসাইকেল আটকসহ ৪টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

পরে খবর পেয়ে বেলা ১২টার সময় থানার অফিসার ইন চার্জ হালিমুর রহমান বাবু ফোর্স নিয়ে কৃষ্ণনগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেও মূল হোতা ডাকাত সদ্দার নুরুল, শাহীন কাউকে আটক করতে পারেনি।

এক সময়কার আলোচিত ডাকাত সরদার নুরুল এখন কৌশল অবলম্বন করে সহযোগীদের দ্বারা বিভিন্ন জেলায় মোটরসাইকেল ছিনতাই ও আন্ত :জেলা চোর চক্র গড়ে তুলে প্রতিনিয়ত গাড়ি চুরি ও ছিনতাই কাজ চালিয়ে আসছে বলে নাম না প্রকাশ করার সত্বে তথ্যগুলো সাংবাদিকদের জানান।

তবে এ ব্যাপারে পুলিশের হাতে আটক মাহফুজা বেগম সাংবাদিকদের জানায়, রাতে কখন মোটরসাইকেল রেখে গেছে শাহীন বিষয়টি তারা জানে না। সকালে তার মুরগির ঘরের ভিতরে রাখা মোটরসাইকেল দেখে লোকজন ডেকে তুললে সে জানতে পারে। মোটরসাইকেল রাখার বিষয় সে অস্বীকার করে। গ্যারেজ মালিক রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানায় সে মোটরসাইকেল কিনে ভাড়া দিয়ে থাকে তবে বৃহস্পতিবার বিকালে শাহীন তার নিকট থেকে ১টি মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে যায় তখন তার সাথে ইকবাল ছিল। এর চেয়ে বেশি সে জানেনা। তার সবগুলো মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন না থাকলেও শোরুমের কাগজ আছে বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটকৃত আসামিদেরকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।