সিরাজগঞ্জে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের রাস্তার অভাবে ডিঙ্গী নৌকাই একমাত্র ভরসা!

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুরা বিনোদ ইউনিয়নের হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন স্কুলে পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। বর্ষা মৌসুমে চলাচলের একমাত্র তাদের ভরসা ডিঙ্গী নৌকা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার মাগুরা বিনোদ ইউনিয়নের হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮১ সালে এলাকার জনসাধারণ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুনামের সহিত স্কুলটি চলছে। ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান খুবই ভাল। বর্তমানে স্কুলটিতে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

প্রায় দুই শতাধিক ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করে আসছে। স্কুলের পড়াশুনার মান ভাল থাকায় এলাকার অনেক শিক্ষার্থীরাও হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে আসে। যাতায়াতের রাস্তা না থাকার কারণে প্রতিদিনই ছোট ডিঙ্গী নৌকা বেয়ে স্কুলে যেতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়টিতে যাতায়াতে মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে ছোট ডেঙি নৌকা দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক সময় পানিতে পড়ে গিয়ে কাপড়, বই, খাতা-কলম ভিজিয়ে ফেলে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ারও শঙ্কা থাকে শিক্ষার্থীদের। বর্ষা মৌসুম ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময় শিক্ষার্থীরা জমির আইল দিয়ে আসতে গিয়ে ধান খেতে পড়ে বইখাতা ভিজে যাওয়ারও ঘটনাও ঘটে।

হামকুড়িয়া গ্রামটিতে প্রায় দেড় হাজার লোকের বসবাস। তাদের হাট বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে যেতে হলে নৌকায় চরে পাকা রাস্তায় উঠতে হয়। তাই তাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যমও ছোট ডিঙি নৌকা।

অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী , আকাশ , রাজু সরকার, সজিব হালদার ও নিলয় বলেন, রাস্তা না থাকায় বর্ষাকালে আমাদের নৌকায় করে স্কুলে আসতে হয়। অনেক সময় নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে বই-খাতা সব ভিজে যায়। স্কুলের জন্য একটা রাস্তা নির্মাণ হলে আমাদের স্কুলে আসতে অনেক সুবিধা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মোঃ আব্দুল রহিম বলেন, আমরা এলাকায় যারাই জীবনযাপন করি, তারা খুবই যাতায়াতের সমস্যায় আছি। নিম্ন এলাকা রাস্তা যাও আছে, তা সামান্য বৃষ্টি ও বর্ষার পানিতে ডুবে যায়। পরে নৌকাই আমাদের ভরসা। সব চেয়ে বেশী কষ্ট করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এখানে জরুরী প্রয়োজন রাস্তার।

হামকুড়িয়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়ে আজ পর্যন্ত সুনামের সাথে পাঠদান হয়ে আসছে। এখানে অত্যন্ত মান সম্মত শিক্ষা প্রদান করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, যাতায়াতের রাস্তার অভাবে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই নৌকা বেয়ে স্কুলে আসে, অনেক সময় নৌকা থেকে পরে বই খাতা ভিজে যায়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, হামকুড়িয়া হান্ডিয়াল রোডের ওয়াবদারবাঁধ থেকে গ্রামের দক্ষিণ পাশ দিয়ে সরকারপাড়া যে রাস্তাটি স্কুল পযর্ন্ত আছে, তাও চলাচলের উপযোগী না এবং নিচু হওয়ায় সামান্য বর্ষায় পানিতে ডুবে যায় এবং স্কুল থেকে ভরৎ সরকারপাড়া পযর্ন্ত কোন রাস্তা ভাল না থাকার কারণে চরম ভোগান্তিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ এলাকার জনসাধারণ।