প্রবাসীকে আটকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর
সিলেটের লক্ষণাবন্দে সালিশের নামে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে এক প্রবাসীকে সালিশের নামে আটক করে জোরপূর্বক সাদা অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ২ জুন ২০২৩ইং নোয়াই দক্ষিণভাগ গ্রামে। জোরপুর্বক সাদা অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে ওমান প্রবাসী মোগলাবাজার থানার হরগৌরী গ্রামের তাজুল ইসলাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (২য়) আদালতে মামলার দায়ের করেন।
মামলার নং ২৬০/২০২৩ইং (তারিখ-১১ জুন ২০২৩ইং)। মামলার অভিযোক্ত সূত্রে জানা যায়, মোগলাবাজার থানার হরগৌরী গ্রামের ওমান প্রবাসী তাজুল ইসলাম ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ইং মুসলিম শরীহা মোতাবেক বিবাহ বন্ধনের আবদ্ধ হন নোয়াই গ্রামের মৌলভী আহমদ আলীর মেয়ে হামিদা বেগমের সাথে। বিবাহরে পর থেকে হামিদা বেগম পড়ালেখার অযুহাত দেখিয়ে পিত্রালয়ে বসবাস করে আসছেন বড় ভাইর স্ত্রী সাহিদা বেগমের সাথে। সেই অবস্থায় ওমান প্রবাসী তাজুল ইসলাম স্ত্রী পড়ার লেখার জন্য এইচ.এস.সি ও সীমান্তিক কলেজে নার্সিং ডিপ্লোমা সনদ অর্জন বাবদ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন তিনি। তাছাড়া ৩টি দামী মোবাইল ফোন যার বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ টাকা প্রদান করেন তার স্ত্রীকে। তাছাড়া লন্ডনে কেয়ার ভিসা করার কথা বলে আরও ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
ওমান প্রবাসী তাজুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, তিনি প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী হামিদা বেগমের বড় ভাই স্ত্রী সাহিদা বেগম তার নিকট থেকে ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ শর্তে ঋণ নিলে সে টাকা ও আত্মসাত করেন উভয়ে। ওমান প্রবাসী তাজুল ইসলাম প্রবাসে থাকা অবস্থায় লোক মুখে জানতে পারেন তার স্ত্রী দেশে বেপরোয়া চলা ফেরা করিতেছে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তিনি ১৭ মার্চ ২০২৩ ইং দেশে আসনে। দেশে আসার পর তাজুল ইসলাম স্ত্রী হামিদা বেগমে নিজ বাড়িতে আনতে গেলে হামিদা বেগম স্বামী হিসেবে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে তাজুল ইসলাম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার স্ত্রী ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তার ঘরে স্ত্রী থাকা অবস্থায় ওসমানী নগরের হবিবুর রহমান নামের একজন কে বিবাহ করেছেন এবং তার অজান্তে সিলেট শহরে বাসা বাড়া নিয়ে তার সাথে ঘর সংসারও করেছেন। সে সময় তাজুল ইসলামের কাছ থেকে পড়া লেখার খরচ দেখিয়ে বাসা ভাড়া সহ বিবিধ খরচ স্ত্রী হামিদা বেগম দাবী করলে প্রতি মাসে তাজুল ইসলাম তা প্রদান করতেন। হামিদা বেগমের অতিরিক্ত চলচাতুরী দেখে দ্বিতীয় স্বামী হাবিবুর রহমানের সন্দেহ দেখা দিলে উভয়ের মধ্যে মনমালিন্য দেখা দেয় এক পর্যায়ে হামিদা বেগমকে ১২ জুন ২০২২ ইং তারিখে হাবিবুর রহমানও তালাক প্রদান করেন। আরও তাজুল ইসলাম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার স্ত্রী হামিদা বেগম হাবিবুর রহমানকে তালাক দেওয়ার পর তার কাছ থেকে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে লন্ডনে যাওয়ার কথা বলে কেয়ার ভিসা বাবদ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা এনে অন্য একটি ছেলে কে বিবাহ করেছেন বলে জানতে পারেন সেটিও অভিযোগ করেন। সব কিছু বিবেচনা করে স্ত্রী হামিদা বেগম ও স্ত্রীর বড় ভাই’র স্ত্রী সাহিদা বেগমের বিরুদ্ধে আদালতে বিচার চেয়ে প্রতারণার মামলা করেন।
উক্ত বিষয় গুলো সালিশের মাধ্যমে শেষ করে দিবেন বলে দায়িত্ব নেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হোসেন। এতে ২ জুন ২০২৩ইং হামিদা বেগমের বাড়িতে আসতে হবে বলে জানালে সরল বিশ^াসে রাতে তাজুল ইসলাম ও তার বড় ভাই ফখরুল ইসলাম কে সাথে নিয়ে আসলে। কিছুক্ষণ একটি রুমে বসার পর ওমাস প্রবাসী তাজুল ইসলামকে তার স্ত্রী, আবুল হোসেন মেম্বার সহ অন্যান্যরা তার প্রাপ্য টাকার দাবী ত্যাক করিয়া দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তাতে তাজুল ইসলাম চাপে নত না হলে হামিদা, আবুল মেম্বার সহ ৬/৭ জন দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে বড় ভাই ফখরুল ইসলামকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে পরিকল্পিত ভাবে ১০০শত ৩টি অলিখিত সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নিয়ে থাকেন,এবং বাড়ি থেকে তাজুল ও তার বড় ভাই ফখরুলকে বের করে দেন।
পরবর্তীতে তাজুল ইসলাম ১১ জুলাই ২০২৩ ইং আদালতে ৭ জনকে আসামী করে মামলা করেন। উক্ত মামলার আসামীরা হলেন – ওয়ার্ড মেম্বার আবুল হোসেন, হামিদা বেগম, সাহিদা বেগম,বিলাল আহমদ, ফুলসাইন্দ গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে রুমেল আহমদ, লক্ষণাবন্দ গ্রামের ফেসন আহমদ, ইসলাম উদ্দিন । বর্তমানে মামলাটি গোলাপগঞ্জ থানায় তদন্ততাদীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন