সিলেট নগরীতে বেড়েছে মশার উৎপাত, সিসিক নীরব ভূমিকায়
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/10/sylhet-Photo5.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
সিলেট নগরীতে বেড়েছে মশার উৎপাত। সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় কিছুটা মৃদু আবহাওয়ায় শীতের পূর্বাস দেখা দিয়েছে। শীতের আগমনে পুরো সিলেট নগরীর অলি গলিতে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী।
মশার উৎপাত বৃদ্ধিতে সিলেট সিসিক কিন্তু এই সময়ে নগর এলাকায় মশা নিধন কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। বেশ কিছু দিন থেকেই নগর এলাকার কোথাও মশক নিধন কর্মীকে দেখা যায়নি। তাদের নীরব ভূমিকায় দেখাযায়। ফলে বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান অফিস আদালতে বাড়ছে মশার উপদ্রব।
বিকেল হলেই নগরীর ড্রেন, নালা, ছড়ায় অসংখ্য মশা দেখা যায়। এসব নিয়মিত পরিষ্কার না করা ও মশানিধনের ওষুধ না ছিটানোকে দায়ী করছেন নগরীর বাসিন্দারা।
তারা বলছেন, নগরীতে মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকা ও কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি না করার ফলে মশক নিধনে কর্মীরা কাজ করছেন না, এতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হলেও বর্তমানে সিটির ওয়ার্ড হয়েছে ৪২টি। সেজন্য মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।
এদিকে মশক নিধন কার্যক্রমের জন্য ১৫ দিন পরপর ফগার মেশিনে ওষুধ স্প্রে করার কথা রয়েছে, এজন্য সব মিলিয়ে তাদের ৯০ জন কর্মী প্রয়োজন হয়। সেসব কর্মীদের দিন প্রতি পাঁচশত টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। এভাবেই মশা নিধনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সিসিক। তবে যাদের দিয়ে কাজ করানো হয় তারা সবাই অস্থায়ী ভাবে কাজ করেন, সেজন্য তারা পরের বার আর কাজ করতে চান না।
এ নিয়ে সিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে তারা যেহেতু দৈনিক মজুরিতে কাজ করে থাকেন সেক্ষেত্রে অনেককর্মী কাজে ফাঁকি দেন।
এদিকে আগে মশক নিধন কার্যক্রমের কর্মীদের কিছু ওয়ার্ডে নগর ভবনের দায়িত্বশীলরা ও দূরবর্তী কিছু ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করানো হতো।
তবে ৫ আগস্ট পরর্বর্তী প্রেক্ষাপটে মেয়র-কাউন্সিলর শুণ্য নগরীতে প্রায় বন্ধ রয়েছে মশক নিধন কার্যক্রম। গত দেড় মাসেরও বেশী সময় থেকে নগর এলাকায় কাউকে মশক নিধন স্প্রে করতে দেখেননি স্থানীয়রা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন তারা।
সিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা বছরে ৪টি ধাপে পুরো নগরীতে মশক নির্ধন কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল সঙ্কটের কারণে তা ঠিক ভাবে করা সম্ভব হয় না। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের পর্যাপ্ত জনবল নেই। এরই মধ্যে বেড়েছে আরো ১৫টি ওয়ার্ড। ফলে মশকনিধনে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় নিয়ম মাফিক কীটনাশক প্রয়োগ না করায় মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণ করতে একটি এলাকায় ১৫ দিন পর একবার করে স্প্রে এবং এর ১৫ দিন পর ফগার মেশিন ব্যবহার করতে হয়। এভাবে ৪ থেকে ৬ বার স্প্রে করতে পারলে দীর্ঘ মেয়াদী ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু প্রয়োজন মাফিক জনবল না থাকায় সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। স্প্রে করার ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ফগিং করতে হচ্ছে। ফলে অভিযানের সুফল মিলছে না।
নগরীর চারাদিকির পারের বাসিন্দা মুজিব খান বলেন, ধীরে ধীরে গরম কমছে শীতের ভাব আসছে। এই সময়ে সন্ধ্যা হলেই মশার যন্ত্রণায় ঘরে-বাহিরে থাকা যায় না। দোকান থেকে কয়েল কিনে আনলেও সেই মশা মারা যায় না।
সিসিকের অবহেলার কারণে এই অবস্থা হয়েছে। নগরীতে যেসব ছড়া, নালা, ড্রেন রয়েছে তারা সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করেন না। এর কারণে যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য মশা জন্ম নেয়। এজন্য সিসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নিয়মিত মশা নিধন করার জন্য স্প্রে করতে হবে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, অর্থ ও জনবলের সংকট থাকায় মশকনিধন কার্যক্রম যে ভাবে পরিচালনা করার কথা রয়েছে সেভাবে হচ্ছে না। এই মুহূর্তে ওয়ার্ড গুলোতে একেবারেই কাজ হচ্ছে না।
তবে সেপ্টেম্বর থেকে আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১৫ জন সুপারভাইজার ও ১৫ জন ঔষধ ছিটানোর জন্য কর্মী নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় এডিস মশার লার্ভা খোঁজে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন