রোহিঙ্গারা যেন ফিরতে না পারে, তাই সীমান্তে মাইন বসাচ্ছে মিয়ানমার

বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে মিয়ানমার। গত তিনদিন ধরেই এই ল্যান্ডমাইনগুলো সীমান্তে পুঁতে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের দুটি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

সূত্র দু’টি জানিয়েছে, যেসব রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা যেন আবার মিয়ানমারে ফিরে যেতে না পারে সেজন্যই হয়তো মাইনগুলো পুঁতে রাখা হয়েছে।

সীমান্তের কাছে মাইন পুঁতে রাখার ঘটনায় আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানাবে বাংলাদেশ। রয়টার্সের কাছে এসব তথ্য জানালেও সংবেদনশীলতার কারণে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেননি তথ্যদাতারা।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান শুরু করার পর এখন পর্যন্ত ৪শ রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

একটি সূত্র মিয়ানমারকে জানিয়েছে, সীমান্তের পিলারের মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়ায় নিজেদের এলাকায় ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে মিয়ানমার।

দু’টি সূত্রই জানিয়েছে, মূলত বিভিন্ন প্রমাণ এবং গুপ্তচরদের কাছ থেকেই বাংলাদেশে মাইন পুঁতে রাখার খবর পেয়েছে। তারা বলেন, আমরা আমাদের গুপ্তচরদের কাছ থেকেই মাইন পুঁতে রাখার খবর নিশ্চিত হয়েছি।

মনজুরুল হাসান খান নামে এক বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী রয়টার্সকে বলেন, মঙ্গলবার মিয়ানমারের কাছ থেকে দু’টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সোমবারও দু’টি বিস্ফোরণ হয়েছে। তবে সীমান্তে বিস্ফোরণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

এদিকে, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুখ খুললেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সাং সু চি। দ্বিতীয়বারের মতো মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন তিনি।

মঙ্গলবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে সু চি বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মানবাধিকার বা গণতান্ত্রিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করার মানে কি হয় তা আমরা অন্যদের তুলনায় বেশ ভালো ভাবেই জানি। আমাদের দেশের সব নাগরিকই তাদের অধিকার রক্ষার দাবিদার, এটা আমরা নিশ্চিত করেছি। এই অধিকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয় বরং সামাজিক এবং মানবিক প্রতিরক্ষারও দাবিদার তারা।

তার এমন বক্তব্য সেনাবাহিনী এবং সরকারের পক্ষে তার অবস্থানকেই স্পষ্ট করল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি ইতিবাচক অবস্থান নেবেন এমনটাই আশা করেছিল বিশ্ব। কিন্তু শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই নেত্রী ক্ষমতা গ্রহণের রোহিঙ্গাদের ভাগ্যে আরো খারাপ পরিণতি ঘটেছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন, গণহত্যায় তিনি শক্ত ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।