সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে : মওদুদ
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দেশের জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি এই রকম অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, তাহলে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের তফাৎ হবে ৭৫ শতাংশ।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জিয়া নাগরিক ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে মওদুদ এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করার দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল সভাপতি-সম্পাদকসহ ১০টি পদে বিজয়ী হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল একটি সহসম্পাদকসহ চারটি পদে জয়লাভ করেছে।
সভাপতি পদে নীল প্যানেলের অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ৫৪ ভোট বেশি পেয়ে আবারও বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোটসংখ্যা ২,৩৬৯। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাদা প্যানেলের ইউসুফ হোসেন হুমায়ন। তাঁর প্রাপ্ত ভোটসংখ্যা ২,৩১৫। অন্যদিকে সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ৪৪১ ভোট বেশি পেয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাদা প্যানেলের এস কে মো. মোরসেদ।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট বার আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করেছে; কিন্তু জিততে পারেনি। এ বছরের নির্বাচন আমাদের জন্য সাংঘাতিক তাৎপর্যপূর্ণ। সরকারের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ তিনি বলেন, ‘নাম বলবে না, সরকারের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেছেন এই নির্বাচনের হাওয়া উল্টাতে এবং জয়লাভ করতে। কিন্তু তারপরও তাঁরা পারেননি।’
যেখানে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার নেই, সেখানে উন্নয়নশীল দেশের এ তকমা অর্থহীন মন্তব্য করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। নির্বাচিত সংসদ নেই অথচ তকমা লাগানো হয়েছে উন্নয়নশীল দেশের। আসলে উন্নয়নশীল দেশের এই তকমা অর্থহীন। এমন উন্নয়নে দেশের মানুষ কোনোভাবে সম্পৃক্ত হতে চায় না। কারণ, গণতন্ত্র ছাড়া কখনো সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
মওদুদ আরো বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে আরো সাত থেকে আট বছর আগে আমরা এই উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতাম। এই সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি আর কুশাসনের ফলে আজকে এই স্বীকৃতি পেতে বিলম্বিত হয়েছে। এ স্বীকৃতিতে সরকারের কোনো অবদান নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরো বলেন, ‘আমরা এখন শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছি। একটা সময় আসবে যদি এই সরকার সমঝোতায় না আসে, তখন রাজপথ ছাড়া আমাদের অন্য কোনো বিকল্প থাকবে না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈশা।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন