সোবহান-আজহার-কায়সারের আপিল শুনানি পেছাল
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুস সোবহান, এটিএম আজহারুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টি নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিল শুনানির দিন পিছিয়ে আগামী ২১ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আজ আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সর্বশেষ গত বছরের ৩০ আগস্ট জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর রিভিউ খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এরপর আর কোনো মামলার শুনানি হয়নি আপিল বিভাগে।
এক বছর পর ১৩ আগস্টের আপিল বিভাগের কার্য তালিকায় ওঠে আজহার এবং সৈয়দ কায়সারের আপিল মামলা। তিনদিন পর ওঠে সুবহানের আপিল মামলা।
মাওলানা আব্দুস সোবহান
২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাবনা জেলায় শান্তি কমিটির নেতা সুবহানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ওই বছরের ১৮ মার্চ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সুবহানের আইনজীবীরা।
৮৯ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ১১৮২ পৃষ্ঠার আপিল আবেদনে ৯২টি যুক্তি দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে সুবহানের খালাসের আরজি জানানো হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ৯টি অভিযোগের মধ্যে ছয়টিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড ও অপর দুইটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। অপর একটি অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এটিএম আজহারুল ইসলাম
ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল দায়ের করেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবীরা এ আপিল করেন।
আপিল আবেদনে এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাস চাওয়া হয়েছে। মোট আপিল ৯০ পৃষ্ঠার এবং আপিলে খালাসের পক্ষে ১১৩টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।
আজহারুলের বিরুদ্ধে গঠন করা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি অভিযোগে তাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়। একটিতে ২৫ বছর এবং অপরটিতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এ জামায়াত নেতাকে।
আর প্রমাণিত না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আনা ১ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার
জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল করা হয়।
২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আদালত কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দেন।
তার বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
এছাড়া ১, ৯, ১৩ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর, ৭ নম্বরে সাত বছর ও ১১ নম্বরে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। ৪ ও ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ অভিযোগগুলোতে খালাস দেয়া হয় তাকে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন