হাকালুকি হাওর জুড়ে সূর্যমুখীর হাঁসি
এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি এখন যেন এক সূর্যমুখীর মিলনমেলা। হাওরের বুক চিরে হলদে ফুলের রাজ্য যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
গাছে গাছে হলুদ সূর্যমুখী ফুল প্রকৃতিতে হলুদ গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে, সেখানে সাময়িক সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে চায় মন। বিস্তীর্ণ সূর্যমুখী ফুলের হলুদাভাব দৃশ্যটি যে কারো মনকে আকৃষ্ট করে তোলে।
তাইতো হরহামেশা পর্যটকরা ভিড় করছেন হলদে রানীর রাজ্যে। সারি সারি সূর্যমুখী গাছের ডগায় বড় আকারের ফুল, যেন দিগন্তজুড়ে হলুদের সমারোহ। সকাল গড়িয়ে বিকেলে যখন সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে, ঠিক তখনই হাকালুকির সৌন্দর্য ফুটে ওঠে সূর্যমুখীর হাসিতে। মৃদু রোদে দূর থেকে মনে হয় যেন সূর্যের মেলা বসেছে।
বৃহত্তর হাকালুকি হাওরে বইছে যেন সূর্যমুখীর সুবাতাস। এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন পর্যটকরা ভিড় করছেন হাকালুকির তীরে।
এ হাওরে সূর্যমুখীর বাগান দেখতে আসা পর্যটকরা বলেন, পড়ন্ত বিকেলে সূর্যমুখীর হাসি সত্যিই অসাধারণ। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আমরা হাকালুকিতে এসেছি।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাকালুকি হাওরসহ বেশকিছু এলাকায় তৈলবীজ হিসেবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ এখন থেকে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারি সহায়তায় অল্প ব্যয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়তে চলছে।
সূর্যমুখী চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা দু’জন মিলে প্রায় এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আগামীতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে চাষ আরো বাড়াব।
সাগরনালের পাতিলাসাঙ্গন গ্রামের আবু তাহের ও জাকির হোসেন বলেন, আমরা ইবার ফয়লা প্রায় দুই কিয়ার জমিনও সূর্যমুখী চাষ করছি। আশা করি ভালো ফলন অইব। আমরা সরকারের কাছ তাকি উপজেলার কৃষি অফিসর মাধ্যমে টেখা ছাড়া সার, বীজ ও ঔষধ পাইছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জুড়ী উপজেলার ৬৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। চাষকৃত সূর্যমুখীর মধ্যে আরডিএস ২৭৫ ও হাইসান ৩৩ জাতের আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে আরডিএস ২৭৫ প্রদর্শনীতে ও হাইসান ৩৩ ফলোআপ হিসেবে চাষ করা হয়েছে।
জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, উপজেলায় মোট ৬৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা যাতে লাভবান হয় সে লক্ষ্যে সরকার কৃষকদের সার, বীজ, কীটনাশকসহ নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে। সূর্যমুখী ফুল ভোজ্যতেল হিসেবে গুণগতমানের দিক দিয়ে খুবই ভালো। বাজারে সূর্যমুখীর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এবং উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া চাষের উপযোগী হওয়ায় এ বছর বাম্পার ফলনের মাধ্যমে চাষিদের মুখে হাসি ফুটবে বলে আমরা আশা করছি। এছাড়া চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে আমরা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন