হিজাব পরার পক্ষে বিক্ষোভ করায় কর্ণাটকের ৫৮ ছাত্রী বহিষ্কার

ভারতের কর্ণাটকের শিবমোগা জেলার একটি স্কুলের ৫৮ ছাত্রীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। হিজাব নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় ছাত্রীদেরকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ওই ছাত্রীরা হিজাব নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তারপরই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

তবে স্কুল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরও নিজেদের দাবিতে অনড় ছাত্রীরা। তারা বলেন, ‘হিজাব আমাদের অধিকার। আমরা মৃত্যু বরণ করতে রাজি। কিন্তু হিজাবের সঙ্গে আপস করব না।’

বহিষ্কার হওয়া ছাত্রীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তাদের পাশাপাশি বাকিদের বিরুদ্ধেও ১৪৪ ধারা ভাঙার অভিযোগেও মামলা দায়ের হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, গত তিন দিন ধরেই পুলিশ ও স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছাত্র-ছাত্রীদের হিজাব না পরার নিয়মের কথা জানাচ্ছিলেন।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজে একদিকে হিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছেন মুসলিম ছাত্রীরা। অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছেন।

কর্ণাটকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে গত মাসে উদুপি জেলার সরকারি বালিকা পিইউ কলেজে ছয়জন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে শ্রেণিকক্ষের বাইরে বসতে বাধ্য করার পর। সেই সময় কলেজ প্রশাসন জানায়, ইউনিফর্মের অংশ নয় হিজাব এবং ওই ছাত্রীরা কলেজের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। ছাত্রীদের ক্লাসে হিজাব পরার বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও তাদের ছাত্র সংগঠন।

উদুপির এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের মান্দিয়া এবং শিভামোগগা এলাকায়। সেখানকার কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব নিষিদ্ধ করে।

ইতোমধ্যে আদালতে পৌঁছেছে বিষয়টি। উদুপি সরকারি কলেজের ৫ জন নারী কর্ণাটক হাইকোর্টে শ্রেণীকক্ষে হিজাব নিষিদ্ধের বিপক্ষে পিটিশন দায়ের করেছেন। বর্তমানে সেই পিটিশনের ওপর শুনানি চলছে।

গত ১০ ফেব্রুয়ারির শুনানিতে এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন কর্ণাটক হাইকোর্ট। সেই আদেশে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে আদালতের চুড়ান্ত রায় আসার আগ পর্যন্ত রাজ্যের কোনো স্কুল-কলেজে ধর্মীয় পোশাক পরে কোনো শিক্ষার্থী আসতে পারবেন না।