১৭ দেশের সংখ্যালঘু প্রতিনিধি থাকলেও ছিলো না ভারতের কেউ!
হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে কল্পিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের আজগুবি পরিসংখ্যান তুলে ধরে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন প্রিয়া সাহা নামে এক নারী, যিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক।
ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে প্রিয়া সাহা-সহ ১৭টি দেশের ২৭ জন সংখ্যালঘু প্রতিনিধির সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানের বিষয়ে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা ফ্রিডম হাউজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে ওই অনুষ্ঠানে ২৭ জন প্রতিনিধি ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করে নিজ নিজ দেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন।
ফ্রিডম হাউজের ওই প্রতিবেদনে ২৭ জন প্রতিনিধির কথা উল্লেখ থাকলেও তারা ২৪ জনের নাম প্রকাশ করেছে। এই ২৪ জন ১৭টি দেশ থেকে গিয়েছেন। এসব দেশের মধ্যে ইউরোপের দেশ জার্মানি, এমনকি নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তারা নিজেদের দেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়িত হওয়ার নানান অভিজ্ঞতার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি প্রতিনিধি ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চীন, মিয়ানমারের একাধিক প্রতিনিধি ছিলেন। চীন থেকে ৪ জন এবং পাকিস্তান থেকে ৩ জন ছিলেন।
কিন্তু রহস্যজনক বিষয় হলো, ভারতের কোনো প্রতিনিধিই সেখানে ছিলেন না! অথচ, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে মুসলিম-খ্রিষ্টান সংখ্যালঘুদের নিপীড়িত হওয়ার ঘটনা নিয়মিত বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচিত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো, এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ তাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভারতে উগ্রবাদী হিন্দুদের হাতে নিরপরাধ মুসলিমদের খুন হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর ভারতের দলিতদের ওপর নিপীড়নের মাত্রাও বেড়েছে। এ নিয়ে গত বছর বড় ধরনের আন্দোলনও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে নালিশ করার ক্ষেত্রে ভারতীয় মুসলিম বা খ্রিষ্টান, কিম্বা দলিত প্রতিনিধিরা সুযোগ পেলেন না কেন- সেটা এক বড় প্রশ্ন!
গত বুধবার ওভাল অফিসে যেসব দেশের সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা নিজেদের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন (ফ্রিডম হাউজের প্রতিবদেন অনুযায়ী) সেগুলো হলো- নিউজিল্যান্ড, কিউবা, ইরিত্রিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, সুদান (২ জন), ভিয়েতনাম (২ জন), ইয়েমেন, আফগানিস্তান, চীন (৪ জন), উত্তর কোরিয়া, ইরাক, বাংলাদেশ, মিয়ানমার (২ জন), পাকিস্তান (২ জন), জার্মানি।
এই সাক্ষাতে বাংলাদেশের প্রিয়া সাহা ট্রাম্পের কাছে বলেন, ‘স্যার, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ বিলীন (নিখোঁজ) হয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনও সেখানে ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু মানুষ আছে। আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু আমাদের বাংলাদেশে থাকার জন্য সাহায্য করুন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।’ এসময় ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, ‘কারা জমি দখল করেছে? কারা বাড়ি দখল করেছে?’
জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় রাজনৈতিকভাবে শেল্টার পায়। সব সময়।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন