১৯৬০ সালের পর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

প্রতিদিন দেশের তাপমাত্রা বাড়ছে। আর এতে জনজীবন গরমে হাঁসফাঁস। এই গরমে মানুষ ছাড়া পুশু-পাখির অবস্থাও খারাপ। রাজধানীর পথে ঘাটে চোখে পড়ে কুকুরে কাহিল অবস্থা। কুকুরগুলো গরম থেকে বাঁচতে যেখানে সামান্য পানি পাচ্ছে সেখানে লুটিয়ে পড়ছে।

ঢাকায় বইছে টানা তাপদাহ। আজ শুরু হয়েছে বৈশাখ মাস। চৈত্রের শেষে প্রচণ্ড গরমে কাহিল অবস্থান খেটে খাওয়া মানুষের। এরই মধ্যে বৈশাখের প্রথম দিনে তাপমাত্রার রেকর্ড ছুঁয়েছে রাজধানী ঢাকা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায় এই গরম আরও কয়েকদিন স্থায়ী হবে। শুক্রবার রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জানা যায়, ১৯৬০ সালের পরে ঢাকায় এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। ১৯৬০ সালের এপ্রিলে ঢাকায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেটা রেকর্ড শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিলেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল।

এদিকে শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাও এক দশকের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল।

২০১০ সালে রাজশাহীতে পারদ উঠেছিল ৪২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতেই ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। যা দেশে এ যাবৎকালের রেকর্ড।

এদিকে যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, প্রতিদিনই হচ্ছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তীব্রতাপ প্রবাহ। এই জেলার তাপমাত্রা গত নয় বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গত ২ এপ্রিল থেকে টানা ১২ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

টানা ১২ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করায় চুয়াডাঙ্গার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। গনগনে রোদের তাপে গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচ (বিটুমিন)।

তীব্র তাপদাহে এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন।