২০২৪ সালে চাঁদে পর্যটক নেবে ব্লু অরিজিন


চাঁদে মানুষ নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস৷ বিশেষ একটি যানে করে ২০২৪ সাল নাগাদ পর্যটকদের চন্দ্রপৃষ্ঠে নিতে শুরু করবে তার প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিন৷
মহাকাশ অভিযাত্রী বা গবেষক হিসেবে নয়, শুধু বেড়ানোর জন্যেই মানুষ চাঁদে যেতে পারবে৷ মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই এমন কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষ জেফ বেজোস৷ এ জন্য অ্যামাজনের এই প্রতিষ্ঠাতা আগেই ‘ব্লু অরিজিন’ নামের একটি কোম্পানি খুলেছেন৷
গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন জেফ বেজোস, যেই যানটিতে করে তিনি পর্যটকদের চাঁদে নামাতে চান তার একটি নমুনাও হাজির করেছেন সম্ভাব্য গ্রাহক, নাসার বিজ্ঞানী, গণমাধ্যমকর্মীসহ দর্শকদের সামনে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্লু মুন’৷ আকারে ছোটখাটো দুই তলা একটি বাড়ির সমান এটি, যা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, স্যাটেলাইটসহ চন্দ্রপৃষ্ঠে চলাচল করতে পারবে এমন সব যানও বহন করবে৷ সঙ্গে থাকবে চার থেকে পাঁচজন যাত্রী৷
যানটি দেখিয়ে দর্শকদের উদ্দেশে বেজোস বলেন, এখন সময় হয়েছে চাঁদে ফিরে যাওয়ার এবং বসবাস শুরু করার৷ পুনর্ব্যবহারযোগ্য একটি রকেটে করে যানটি পাঠানো হতে পারে৷
ব্লু মুন প্রকল্পটিকে মূলত একটি বৃহৎ পরিকল্পনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বেজোস৷ তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সেখানে কোনও অবকাঠামো না থাকায় এটির বাস্তবায়ন ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার৷
মহাকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা আর পর্যটনকেন্দ্রিক শিল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে বিভিন্ন দেশ আর ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান৷
ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কও মহাকাশ পর্যটনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন৷ তার প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স এরইমধ্যে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট উদ্ভাবন করেছে, যার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি সফল অভিযানও পরিচালনা করা হয়েছে৷
ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্রেনসনও মহাকাশকেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে গ্যালাকটিক নামের একটি কোম্পানি চালু করেছেন৷ চলতি বছরই তাদের উদ্ভাবিত স্পেইস শিপটি মহাকাশে পাড়ি জমানোর কথা রয়েছে৷
বেজোস অবশ্য এমন এক সময় ব্লু অরিজিন নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা জানালেন যখন ট্রাম্প প্রশাসনও আগামী ৫ বছরের মধ্যে চাঁদে যাতায়তের জন্য অবাকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে৷ গত ২৬ মার্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ২০২৪ সাল নাগাদ চাঁদের কক্ষপথে একটি স্পেস প্লাটফর্ম গড়ে তোলার লক্ষ্য ঘোষণা করেছেন৷ হোয়াইট হাউস চায় যে করেই হোক ২০২৪ সাল নাগাদ অ্যামেরিকার নভোচারীরা যাতে চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে অবতরণ করতে পারে৷ উপগ্রহটি এই অংশটিতে বরফ অবস্থায় পানি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা থেকে রকেটের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানীর যোগান নিশ্চিত করা ও নভোচারীদের খাবার পানির যোগান দেওয়া সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা৷
বেজোস ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনা বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে৷ আমরা এই সময়সীমাটি ধরার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারব, কেননা, তিন বছর আগেই আমরা এই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি৷
সূত্র: ডয়চে ভেলে

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন