৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে নিবন্ধিত দলগুলোকে ইসির চিঠি
সংগঠনের সব পর্যায়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার তাগাদা দিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চিঠি যাচ্ছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান অনুসারে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়টি দলগুলোতে মনে করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দলগুলোর অগ্রগতি জানতে ইসির পক্ষ থেকে এ চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধন পাওয়ার সময় ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিটি কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাদেরকে এটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য এ বিষয়ে কমিশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চিঠি আজ পৌঁছাবে, না গেলে দু’য়েক-দিনের মধ্যে যাবে। আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে কমিশনের কাছে তাদের অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছে।’
নিবন্ধন প্রথা চালুর প্রায় ১০ বছর পার করেও আশাপ্রদ অগ্রগতি না হওয়ায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বলে ইসি সচিব জানিয়েছেন।
আরপিও’র ৯০ এর খ-এর খ(২) অনুচ্ছেদে, কেন্দ্রীয় কমিটিসহ রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ সদস্যপদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং এই লক্ষ্যমাত্রা পর্যায়ক্রমে আগামী ২০২০ সাল নাগাদ অর্জন করার কথা বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে নিবন্ধন পদ্ধতি চালুর পর ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব পূরণের প্রতিশ্রুতি ইসিকে দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত ১৫ শতাংশও নারী সদস্য পূরণ করতে পারেনি দলগুলো। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্ব পর্যলোচনা করে দেখা যায় দল দু’টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারী নেতৃত্ব গত ৯ বছরে কিছুটা বাড়লেও তা সন্তোষজনক নয়।
আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্য কেন্দ্রীয় কমিটির ৭৫টি পদ পূরণ হয়েছে। এর মধ্যে নারী নেতৃত্ব রয়েছে ১৪ জন। শতাংশের হিসেবে এটি দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ। দলের উপদেষ্টা পরিষদ যুক্ত হলে নারী নেতৃত্বে হার আরও কমবে। আর দলের তৃণমূল কমিটিগুলোয় নারী নেতৃত্বের হার এই তুলনায় আরও কম।
অপরদিকে, বিএনপির ৫০২ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারী রয়েছেন ৬৭ জন। শতাংশ হারে এটি মাত্র ১৩ দশমিক ৩৪ ভাগ। বিএনপিরও তৃণমূল কমিটিতে নারী নেতৃত্বের হার হতাশাজনক। ইসির নিবন্ধনের শর্তপূরণে দল দুটিতে আগামী সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে প্রতিটি স্তরে নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে।
এর আগে, বিদায়ী রাকিব কমিশন ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময় ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে তাগাদা দিতে দলগুলোতে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও সেই উদ্যোগ মাঝপথে থেমে যায়। তবে নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার ৪ মাসের মাথায় এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন