৪ হাজারি ক্লাবে মুশফিক
ব্যাটিংয়ে নামার আগেই মাইলফলকের সামনে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৮ রান হলেই তা ছুঁয়ে ফেলতেন। অনায়াসে সেই মাইলফল স্পর্শ করে ফেললেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৪ হাজার রান করার কীর্তি গড়লেন তিনি।
এর আগে এ নজির স্থাপন করেন তামিম ইকবাল। ৫৬ ম্যাচে ১০৮ ইনিংসে ৩৭.৮৪ গড়ে ৪ হাজার ৪৯ রান করেন তিনি। ৫৫.৩২ স্ট্রাইক রেটে এ রান করার পথে ৮ সেঞ্চুরি ও ২৫ হাফসেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২০৬।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৮০ রান। সাকিব আল হাসান ১৪ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন। ৮ রান নিয়ে তার সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০তে এগিয়ে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে দাপুটে জয়ের পর ঢাকা টেস্টেও দুর্দান্তভাবে জিতে সিরিজ জয় লক্ষ্য স্বাগতিকদের। এ টার্গেটে খেলতে নেমে টস ভাগ্যকে পাশে পান টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। প্রথম টেস্টের মতো টস জিতে এ টেস্টেও আগে ব্যাটিং নেন তিনি।
অভিষিক্ত সাদমান ইসলামকে নিয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ফের ব্যর্থ হন তিনি। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলে করেন মাত্র ১১ রান। ঢাকা টেস্টে সতর্ক শুরু করেন সৌম্য। তবু ব্যর্থতার ঘেরাটোপ থেকে বের হতে পারেননি তিনি। রোস্টন চেজের বলে শাই হোপকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার।
ওয়ানডাউনে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন মুমিনুল হক। তোলেন দ্রুত রান। বোলারদের ওপর হন ভীষণ চড়া। টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে যে মেজাজ মোটেও যায় না। এর খেসারত গুনেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। একরকম উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন তিনি। কেমার রোচের করা শর্ট বলটি অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন লিটল মাস্টার। কিন্তু পুল করে উড়িয়ে মারতে গিয়ে রোস্টন চেজকে ক্যাচ দিয়ে আসেন। শটটি ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু। যেন তাকে ক্যাচ প্র্যাকটিস করান পয়েট অব ডায়নামো। ফেরার আগে ৪৬ বলে ২ চারে ২৯ রান করেন টেস্ট স্পেশালিস্ট।
পরে সাদমানকে দারুণ সঙ্গ দেন মোহাম্মদ মিঠুন। জমে উঠে তাদের জুটি। তাতে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে সেই রেসটা ধরে রাখতে পারেননি না মিঠুন। তিনিও উইকেট ছুড়ে আসেন। দেবেন্দ্র বিশুর বল ক্রস ব্যাটে খেলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এ মিডলঅর্ডার। এতে ভাঙে ৬৪ রানের জুটি। ফেরার আগে ২৯ রান করেন তিনি।
একে একে টপঅর্ডারের সবাই ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন সাদমান। ধীরে ধীরে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করার দিকে ধাবিত হচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মিঠুনকে হারিয়ে বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার। তিনিও সাজঘরের পথ ধরেন। দারুণ খেলতে থাকা এ ব্যাটসম্যান দেবেন্দ্র বিশুর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। ফেরার আগে অবশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় তার নাম লিপিবদ্ধ হয়। দেশের হয়ে অভিষেকে সপ্তম সর্বোচ্চ রান করার কীর্তি গড়েন তিনি। ১৯৯ বলে ৬ চারে ৭৬ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার।
সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে শক্তি বাড়াতে বাংলাদেশ দলে আনা হয়েছে দুই পরিবর্তন। অভিষেক হয়েছে বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলামের। দলে ফিরেছেন লিটন দাস। অনুশীলনে চোট পাওয়া মুশফিকুর রহিমের ‘ব্যাকআপ’ হিসেবে একাদশে ঢুকেছেন তিনি। গেল টেস্টে মাত্র চার ওভার বল করা মোস্তাফিজুর রহমানকে বাদ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো বিশেষজ্ঞ পেসার ছাড়া টেস্ট খেলতে নেমেছে টিম বাংলাদেশ।
প্রথম টেস্টে ইমরুল কায়েসকে ধাক্কা মেরে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। তার জায়গায় দলে ফিরেছেন পেসার শারমন লুইস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে পরিবর্তন বলতে এ একটিই।
বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, কাইরন পাওয়েল, শাই হোপ, সুনিল আমব্রিস, রোস্টন চেজ, শিমরন হেটমায়ার, শান ডাওরিচ, দেবেন্দ্র বিশু, জোমেল ওয়ারিক্যান, শারমন লুইস ও কেমার রোচ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন