‘৫ জানুয়ারির মতো বয়কটের ভোট আর কেউ চায় না’

১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ ও ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের মতো বড় দলের বয়কটের নির্বাচন আর কেউ চায় না। এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই সঙ্গে সবাইকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের উদ্যোগ রাখতে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে ‍বুধবার সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। পরে নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন।

বেলা সাড়ে ১২টার পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত চার সদস্যের প্রতিনিধি দল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে দেড় ঘণ্টা বৈঠক করে। এ সময় ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে চায়। এ ক্ষেত্রে আগামী নির্বাচন যেনো ‘প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে’ প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্ধৃতি স্মরণ করে দিতে চাই।

তিনি জানান, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এটা শুধু ভোটের দিন নয়। সবাই যেনো ভোটে প্রার্থী দিতে পারে এবং তারা সুচারুভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারে।

‘বাংলাদেশের অনেক ভালো নির্বাচনের ইতিহাস রয়েছে ; আমরাও চাই- ভোটের দিন প্রতিটি নাগরিক যেনো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে। যেনো তাদের প্রতিটি ভোট গণনা হবে-এটাও যেন নিশ্চিত হয়’, বলেন বার্নিকাট।

পরে বৈঠকের বিষয়ে সচিব নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, আগামীতে যাতে ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৫ জুনের মতো বয়কটের নির্বাচন না হয়-সে বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বড় দলের অংশগ্রহণ না থাকলে ভোটে সহিংসতা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে-আমরা অংশগ্রহণমূল নির্বাচন চাই; যাতে সহিংসতা না হয়। যে নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। সিইসিও বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগোচ্ছে।’

সচিব জানান, সৌজন্য সাক্ষাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিগত নির্বাচনে অভিজ্ঞতা, নতুন চ্যালেঞ্জ, তাদের প্রত্যাশা ও সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

সিইসিকে উদ্ধৃত করে ইসি সচিব বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে ভোটে সহিংসতা থাকবে না। সবাইকে নিয়ে ভোট করতে উদ্যোগ রয়েছে কমিশনের।’

এ সময় সিইসি চার মাসের ব্যবধানে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন ও ১২ জুনের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।

ইসি সচিব বলেন, ‘১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালে আমাদের ভালো নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ৪ মাসের ব্যবধানেও ভালো নির্বাচন করেছে ইসি। সে ক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যেন আর না হয় সে জন্য দু’পক্ষ একমত হয়েছি।’

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটে বড় দল অংশ না নেওয়ায় সবার কোছে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান সচিব।

সচিব বলেন, ‘সবাইকে মাঠে নামানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরাও উদ্যোগ নিচ্ছি। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে এর কাজ শুরু হবে। সবাইকে ভোটে আনতে হবে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব ধরনের সহায়তা করে আসছে। তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, ইভিএম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হচ্ছে-কমিশন সবার মতামত নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি রোডম্যাপ ধরে কাজ এগোনোর কথাও তুলে ধরা হয় বৈঠকে।