৫ বছরে সর্বোচ্চ ডিমের দাম!
রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে ডিমের দাম। দুই সপ্তাহ আগে ৯৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম এখন দাঁড়িয়েছে ১২০-এ। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রোজার ঈদের পর ডিমের দাম কিছুটা বাড়লেও কোরবানির ঈদের পর তা কমে আসে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় দাম বেড়ে ডিম এখন অনেকটাই নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজারে কারও নজরদারি না থাকার কারণে ডিমের দাম এখন দফায় দফায় বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন ডিমের চাহিদা খুব বেড়েছে। বাজারে ডিমের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, খামারিরা তা সরবরাহ দিয়ে পারছে না। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় ডিমের দাম বেড়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ৩ দফা। এর মধ্যে শেষ দুই সপ্তাহ দাম বৃদ্ধির হার ছিল সব থেকে বেশি।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা প্রতি ডজন ডিম ১০৫-১১০ টাকায় বিক্রি করছেন। এক সপ্তাহ আগেও এসব ব্যবসায়ীরা ৯৫-১০০ টাকা ডজনে ডিম বিক্রি করেছেন।
খুচরা পর্যায়ে মুদিদোকানে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০-১১ টাকায়। আর হালি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়। এসব ব্যবসায়ীরা এক ডজন ডিম বিক্রি করছেন ১১৫-১২০ টাকায়।
মালিবাগ হাজিপাড়ার ব্যবসায়ী মো. সাবু বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরেই ডিমের দাম বাড়তি। কিছুদিন আগেও এক ডজন ডিম ৯০ টাকায় বিক্রি করেছি। আর এখন এক ডজন ডিম ১১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাজারে এখন ডিমের অনেক চাহিদা। খামারিরা চাহিদা অনুযায়ী ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। তবে দাম বাড়লেও আমাদের বিক্রি কমেনি। আবার লাভও বাড়েনি। কারণ আমাদেরকেও বাড়তি দামে ডিম কিনে আনতে হচ্ছে।
রামপুরার ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়া বলেন, প্রায় প্রতিদিনই ডিমের দাম বাড়ছে। ৯০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম দেখতে দেখতে ১১০ টাকা হয়ে গেছে। অবস্থা এমন দাম বেড়ে কোথায় যেয়ে থামবে ঠিক নেই।
এতো বেশি দামে ডিম এর আগে কবে বিক্রি করেছেন? এমন প্রশ্ন করা হলে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমি পাঁচ বছরের ওপরে ডিমের ব্যবসা করছি। এখন যে দামে ডিম বিক্রি করছি, এতো বেশি দামে এর আগে কখনও বিক্রি করিনি। তবে গত রোজার ঈদের আগে এক ডজন ডিম ১০৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি।
পূর্ব রামপুরার মুদি ব্যবসায়ী মো. শামছু বলেন, কিছুদিন আগে একপিস ডিম ৮ টাকা বিক্রি করেছি। এখন এক পিস ডিম ১১ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে এক হালি নিলে ৪২ টাকা রাখা যাবে।
ডিমের দাম এতো বেশি কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমরা বলতে পারবো না। দাম বাড়ার কারণ খামারিরাই ভালো বলতে পারবেন। আমরা আড়ত থেকে ডিম কিনে আনি। আড়তে দাম বেশি হলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আড়তে দাম কমলে আমরাও দাম কমিয়ে দেবো।
এদিকে ডিমের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। রামপুরায় ডিম কিনতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরেই ডিমের দাম বাড়ছে। প্রথমে এক ডজনের দাম ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা হলো। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই এখন ১১৫ টাকা ডজন হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারে কারও কোনো মনিটরিং নেই। ফলে যে যখন যেভাবে পারছে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের। দাম বাড়লেও আমাদের কিছু করার নেই। চুপচাপ মেনে নিয়ে বাড়তি দামেই কিনতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন