৬০ দিনের মধ্যে খালেদাকে দণ্ডের টাকা জমার নির্দেশ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার ছয় আসামিকে অর্থদণ্ডের দুই কোটি দশ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। ছয় আসামির প্রত্যেককে সমঅঙ্কে এই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে। মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এই কথা বলা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। বিকেলেই রায়ের সত্যায়িত কপি গ্রহণ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবী ও মামলার বাদীপক্ষ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দীন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সাজা ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। রায়ে আসামি তারেক রহমান, শরফুদ্দীন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামী ১) বেগম খালেদা জিয়া এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসিকিউশনপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় তাঁকে দন্ড বিধির ৪০৯/১০৯ ধারা বিধান মোতাবেক ০৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড এবং আসামী ২) তারেক রহমান (পলাতক), ৩) কাজী সালিমুল হক ওরফে কাজী কামাল, ৪) শরফুদ্দীন আহমেদ, ৫) ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (পলাতক) এবং ৬) মমিনুর রহমান (পলাতক) এর বিরুদ্ধেও আনীত অভিযোগ প্রসিকিউশনপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় দন্ড বিধির ৪০৯/১০৯ ধারার বিধান মোতাবেক ১০ (দশ) বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড এবং বর্ণিত সকল আসামীকে ২,১০,৭১,৬৪৩/৮০ (দুই কোটি দশ লক্ষ একাত্তর হাজার ছয় শত তেতাল্লিশ টাকা আশি পয়সা) অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হলো। উক্ত অর্থ দন্ডের টাকা সাজা প্রাপ্ত ব্যক্তিগণ কর্তৃক প্রত্যেককে সম অংকে প্রদান করতে হবে। আরোপিত অর্থ দন্ডের টাকা রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত বলে গণ্য হবে। আগামী ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে তাদের প্রত্যেককে উক্ত টাকা রাষ্ট্রের অনুকুলে আদায় দেওয়ার নির্দেশ দেয়া গেল।
জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্টের নামীয় সোনালী ব্যাংক, গুলশান নিউ নর্থ সার্কেল শাখা, ঢাকায় রক্ষিত এসটিডি-৭ নং হিসাবে জমাকৃত সাকুল্য টাকা রাষ্ট্রীয় অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করা হলো।’
রায়ে আরো বলা হয়েছে, ‘দণ্ডিত ব্যক্তিগণের হাজতবাস (যদি থাকে) মূল দন্ডাদেশ থেকে বিধি মোতাবেক কর্তিত হবে।
আসামী বেগম খালেদা জিয়া, কাজী সলিমুল হক ওরফে কাজী কামাল এবং শরফুদ্দীন আহমেদকে সি/ডাব্লিও মূলে কারাগারে প্রেরণ করা হোক।
দন্ডিত কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, তারেক রহমান এবং মমিনুর রহমান পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হোক। পুলিশ কর্তৃক ধৃত বা দন্ডিত ব্যক্তি আত্মসমর্পণের তারিখ থেকে উক্ত দন্ডাদেশ কার্যকর হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন