৯ ক্লাবের ঘরে ফেরার চুক্তি, শাস্তি পাবে রিয়াল-বার্সা-জুভেন্টাস
বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ আর জুভেন্টাস-বড় তিন ক্লাব এবার বড় বিপদেই পড়তে যাচ্ছে। যে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে গত কয়েকদিনে এত হইচই, তা থেকে নাম প্রত্যাহার করে উল্টো এখন উয়েফার সঙ্গে সমঝোতার চুক্তি করে ফেলেছে ৯টি ক্লাব।
কিন্তু বার্সা, রিয়াল আর জুভেন্টাস ‘বিদ্রোহী লিগে’ রয়ে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা উয়েফা।
ইউরোপিয়ান সুপার লিগ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়া ৯টি ক্লাবের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে উয়েফা। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, সুপার লিগ থেকে বেরিয়ে আসা ক্লাবগুলো পুরনো অবস্থায় ফেরার অঙ্গীকারনামা ‘ক্লাব কমিটমেন্ট ডিক্লারেশন’-এ স্বাক্ষর করেছে। সেইসঙ্গে কয়েকটি সমঝোতা চুক্তিও করেছে।
ক্লাবগুলো হলো-ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, টটেনহ্যাম হটস্পার, আর্সেনাল, ইতালির এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও স্পেনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
৯ ক্লাবের অঙ্গীকারনামায় আছে-সুপার লিগ আয়োজকদের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানতে তারা সাধ্যের মধ্যে সবরকম পদক্ষেপ নেবে। এছাড়া নিজেদের ভুলের জন্য ক্লাবগুলো মিলিতভাবে মোট দেড় কোটি ইউরো অনুদান দেবে। যে অনুদানের অর্থ যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপজুড়ে শিশু, যুব এবং তৃণমূল ফুটবলের জন্য ব্যয় করা হবে।
একই সঙ্গে এখন থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বা ইউরোপা লিগ থেকে এক মৌসুমের প্রাপ্ত রাজস্বের পাঁচ শতাংশ দিয়ে দেবে ক্লাবগুলো। ভবিষ্যতে কোনো অনুমোদনহীন প্রতিযোগিতায় খেলতে গেলে ১০ কোটি ইউরো এবং কোনো প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করলে ৫ কোটি ইউরো জরিমানা দেবে, এই মর্মে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছে ৯ ক্লাব।
কিন্তু এখন পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি লা লিগার দুই ক্লাব বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ। ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসেরও একই অবস্থা। তাই এই তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির বার্তাই দিয়েছেন উয়েফার সভাপতি আলেকসান্দার চেফেরিন।
তিনি বলেন, ‘এই ক্লাবগুলো (ফিরে আসা ৯ ক্লাব) খুব দ্রুতই তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং তাদের অনু্শোচনা থেকে ভবিষ্যতে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সঙ্গে অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছে।’
চেফেরিন যোগ করেন, ‘কিন্তু যারা এখনও তথাকথিত সুপার লিগে জড়িত রয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে একই কথা বলা যাচ্ছে না। ওই ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে উয়েফা পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবে। যে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার রাখে উয়েফা।’
প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে। আর তাতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেয় ইউরোপের ১২টি শীর্ষ ক্লাব। যা নিয়ে ফুটবল বিশ্বে শুরু হয় তোলপাড়।
এমন খবর প্রকাশ্যে আসার পরই ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির হুমকি দেয় ফিফা ও উয়েফা। অবস্থা বেগতিক দেখে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইংল্যান্ডের ৬ ক্লাব। এরপর সরে আসার ঘোষণা দেয় ইন্টার মিলান ও অ্যাটলেতিকো মাদ্রিদও।
এসি মিলান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দিলেও গণমাধ্যমে জানিয়ে দেয়, সুপার লিগের সঙ্গে আর নেই তারা। উয়েফাও তাদের ফিরে আসার সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করেছে। কিন্তু বার্সা, রিয়াল আর জুভেন্টাস নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় অবশেষে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিল ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন