তদন্ত প্রতিবেদন
‘অগ্নিকাণ্ডের আশপাশে কেমিক্যাল কারখানা-গোডাউন ছিল না’
রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের আশপাশে কেমিক্যালের কোন কারখানা বা গোডাউন ছিল না, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এলাকাবাসীর ভাষ্যে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণকে এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিজুল হকের স্বাক্ষরিত প্রাথমিক তদন্তে প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে ওই প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
এরআগে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২ দুপুর ১২টায় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, শিল্প সচিব আবদুল হালিম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে চকবাজারের চুড়িহাট্টা জামে মসজিদের পাশে আসগর লেন, নবকুমার দত্ত রোড ও হায়দার বক্স লেনের সংযোগস্থলে অগ্নিকাণ্ড সংগঠিত হয়। গলির একপাশে ছিলো ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসন, অন্যপাশে বাচ্চু মিয়ার বাড়ি। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, হোটেল অথবা গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই আগুন হঠাৎ বিদ্যুতিক লাইনের ট্রান্সফরমারে ধরে যায়। ফলে ট্রান্সফরমারে বিস্ফোরন ঘটে। এর ফলে পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ওই এলাকার বাসিন্দারা অন্ধকারে বের হওয়ার পথ হারিয়ে ফেলেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডে ওয়াহিদ ম্যানসন, বাচ্চু মিয়ার বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। সিলিন্ডার ভর্তি গাড়িটি ভস্মিভূত হয়েছে। আশপাশের কয়েকটি দোকান বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তায় প্রচুর কসমেটিকস্, বোতল ও প্লাস্টিকের গ্রেনুলার ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলেও সেখানে কোনো ক্যামিকেলের কারখানা বা গোডাউন ছিল না বলে জানানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ৭৮-এ দাঁড়িয়েছে। দগ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক।
নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৬৬ জন, নারী ৭ জন ও শিশু ৫ জন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৫২ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। এদের মধ্যে ৪১ জন রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। বাকী ১১ জন এখনো রোগী এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৯ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি। ২ জন ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন, অগ্নিদগ্ধ, ভর্তিকৃত রোগীর কারো থেকে ক্যামিকেলের চিহ্ন অথবা গন্ধ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়েছে।
চকবাজার-আগুন-চকবাজারে আগুন-রোহান বাবাটাকে খুঁজেওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত সচিব মফিজুল হককে প্রধান ১২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, যদি সিটি কর্পোরেশন চায় তবে চকবাজার এলাকা থেকে কেমিক্যালের সব গুদাম সরিয়ে নেয়া হবে। ‘এসব কেমিক্যাল কারখানা সরানোর জন্য আমরা সব ধরনের সহায়তা দেবো, যদি মেয়র সহায়তা চান। সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন