অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য সংকট : তুরস্ক
সৌদি আরবে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনে তুরস্ক যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা নাকচ করে দিয়েছে রিয়াদ। সৌদি আরব বলছে, প্রতিবেশি কাতার যেভাবে তুরস্ককে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে; রিয়াদ সে ধরনের কোনো সুযোগ দেবে না। এটার প্রয়োজন নেই।
সৌদি আরবে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনে রিয়াদের কাছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করার পর এক বিবৃতিতে রিয়াদ বলেছে, কোনো প্রয়োজন নেই। কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরুর পরপরই ওই প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে আঙ্কারা।
চলতি মাসে কাতারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদের মাত্র দুইদিন পর দোহায় সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দেয়া হয় তুরস্কের পার্লামেন্টে। উপসাগরীয় অঞ্চলের এ সংকট সমাধানে শুক্রবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগলু বাদশাহ সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
আলোচনার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধান সম্ভব কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগলু বলেন, ‘না, এই সংকটে অন্যান্য দেশ জড়িত…এই মুহূর্তে এটি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, তিনি সৌদি বাদশাহকে বলেছেন, কাতারের বিরুদ্ধে দেয়া শর্তগুলো নমনীয় করলে বিষয়টি হালকা হয়ে যাবে। বাদশাহ সালমানের কাছে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের বার্তা পৌঁছে দিয়ে কাভুসোগলু বলেন, ‘আমরা আশা করি যথাযথ উপায়েই এই সংকটের সমাধান বের হবে। আর আমরা এতে সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি।’
কাতারের সঙ্গে সৌদি আরবের নেতৃত্বে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর ও আরো কয়েকটি দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। কাতারের সঙ্গে সৃষ্ট মধ্যপ্রাচ্যের এই নজিরবিহীন সঙ্কট নিরসনে এগিয়ে এসেছে আঙ্কারা। কাতারের শক্তিশালী ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী কাতার।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বলছে, সৌদি ভূখণ্ডে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনে অনুমতি দিতে পারে না রিয়াদ। দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন, এ ধরনের জিনিসের প্রয়োজন নেই সৌদি আরবের। সৌদি সশস্ত্র বাহিনী ও সামরিক সক্ষমতাই অত্যন্ত সেরা মানের।
সৌদি ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা সুরক্ষাসহ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৌদি সশস্ত্র বাহিনী বিদেশে অংশ নিচ্ছে।’
চলতি সপ্তাহে পর্তুগালের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, ২০১৪ সালে কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরুর পর তিনি একই ধরনের প্রস্তাব সৌদি বাদশাহ সালমানকে দিয়েছিলেন।
‘আমি একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম বাদশাহ সালমানকে…যদি এটা সম্ভব হয় তাহলে আমরা সৌদিতেও একটি ঘাঁটি স্থাপন করতে পারি। তারা বলেছেন, এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হবে। কিন্তু সেই দিন থেকে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’-বলেন এরদোয়ান।
জঙ্গিবাদে সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগে গত ৫ জুন সৌদি আরবের নেতৃত্বে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। পরে সম্পর্ক ছিন্নের এই তালিকায় যোগ দেয়, লিবিয়া, ইয়েমেন, জর্ডান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালদ্বীপ। তবে কাতার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, কূটনৈতিক এই বিচ্ছিন্নতা ভিত্তিহীন।
সূত্র : অ্যারাবিয়ান নিউজ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন