অধিবেশনের মেয়াদ বেড়েছে, পাস হচ্ছে একের পর এক বিল
সরকারের শেষ সময়ে ও সংসদের শেষ অধিবেশনে পাস হচ্ছে একের পর এক বিল। এসব বিল পাস করার জন্য অধিবেশনের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। সকালে-বিকেল প্রতিবেদন উত্থাপন করা হচ্ছে। রাতেই তা সংসদীয় কমিটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
গত ২১ অক্টোবর সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে চলতি অধিবেশন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু স্পিকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধিবেশনের মেয়াদ সোমবার পর্যন্ত বেড়েছে। এমনকি শনিবারও সংসদের বৈঠক চলবে।
এ বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার বলেন, অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হবে সংসদে। এজন্য সংসদের বৈঠক সোমবার পর্যন্ত বাড়াতে হয়েছে। শনিবারও সংসদের বৈঠক চলবে।
সংসদের ২৩তম অধিবেশন রোববার শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫ কার্যদিবসে ৯টি বিল পাস হয়েছে। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) সংশোধী এখনও পাস হয়নি।
সচিবালয়ের আইন শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি অধিবেশনে প্রায় দুই ডজন বিল পাস হতে পারে। অপরদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বৈধতা দিয়ে আরপিও-তে সংশোধনী আনা হচ্ছে। আরপিওতে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী এনেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে শুক্রবার মুলতবি দিয়ে শনিবার আবার সংসদের বৈঠক বসবে।
সংসদে এভাবে একের পর এক আইন পাসের সমালোচনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী বৃহস্পতিবার সকালে প্রেস বিফ্রিংয়ে বলেন, ‘সরকার তাদের শেষ সময়ে একের পর এক কালাকানুন পাস করছে। অধিবেশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে এসব কালো আইন পাস করছে। তাই মানুষ আতঙ্কে ঘুমাতে পারছে না। ঘুমের মধ্যে তারা আঁতকে উঠছেন।’
সূত্র জানায়, এই বিল পাসের হিড়িকে কোনো বিল সংসদে উত্থাপিত হয়ে মাত্র ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্টের জন্য সময় নির্ধারিত হয়। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিন রাতে সম্পূরক কার্যসূচি এনে বিলের রিপোর্ট উপস্থাপিত হচ্ছে। বিল পাস হচ্ছে। এমনকি সংসদ অধিবেশন শেষ হবার পর রাত ১১টার পরে স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সারাদিনে সাতটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তার মধ্যে বিল সম্পর্কিত ছিল পাঁচটি এবং দুটি স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠক। গত বুধবার রাত ১১টার পরে দুটি বিলের রিপোর্ট স্থায়ী কমিটিতে চূড়ান্ত করা হয়।
চলতি অধিবেশনে ইতোমধ্যে পাস হওয়া ৯টি বিল হলো- শিশু (সংশোধন) বিল-২০১৮, হাউজিং বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিল-২০১৮, ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড বিল-২০১৮, সরকারি চাকরি বিল-২০১৮, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল-২০১৮, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বিল-২০১৮, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বিল-২০১৮, মানসিক স্বাস্থ্য বিল-২০১৮ এবং সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল)বিল-২০১৮ ।
এ ছাড়া পাসের অপেক্ষায় থাকা বিলগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৮, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনিস্টিটিউট বিল-২০১৮, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বিল-২০১৮, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র বিল-২০১৮, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বিল-২০১৮, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট বিল-২০১৮, মৎস্য সঙ্গ নিরোধ বিল-২০১৮, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বিল-২০১৮, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট বিল-২০১৮, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস বিল-২০১৮ ও কাস্টমস বিল-২০১৮।
উল্লেখ্য, ১০ম জাতীয় সংসদের গত ২২তম সংসদ অধিবেশনে ১০ কার্য দিবসে ১৮ টি বিল পাস হবার রেকর্ড গড়ে। সে রেকর্ড এবার ভাঙতে পারে বলে সংসদের একাধিক কর্মকর্তা জানান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন