অপুষ্টিতে ভুগছে বন্যায় আক্রান্ত শিশুরা
বন্যার কারণে নিজকুর্ণিবাড়ী গ্রাম থেকে ৫ ছেলে মেয়ে নিয়ে আরজিনা বেগমের ঠাঁই হয়েছে কুতুবপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর। দিনমজুর এই দম্পতির ৩ মেয়ে স্কুল পড়ুয়া হলেও জিসান বাবু এখনো মায়ের দুধের উপর নির্ভরশীল। ৩ বছরের জিহাদ বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবারও খায়। কিন্তু গত ১৫দিন আগে বাঁধে ঠাঁই নেয়ার পর থেকে কমে গেছে বুকের দুধ।
সেই সাথে বাড়তি খাবার মিলছে না জিহাদের ভাগ্যে। ফলে জ্বরসহ নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তাদের শরীরে। একইভাবে বাঁধে আশ্রয় নেয়া শতশত পরিবারের শিশুর দশা একই রকম।
বন্যা আর নদী ভাঙনে বগুড়ার সারিয়াকান্দি বাঁধের উপর আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে সরকারি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছালেও শিশুদের পুষ্টির জন্য নেয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। একদিকে মায়ের ভাল খাবারের অভাবে শিশুরা বুকের দুধ পাচ্ছেনা। অন্যদিকে বাড়তি খাবারের অভাবে অপুষ্টিতে শুরু হয়েছে রোগ বালাই। বানভাসি মা-শিশুদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, শিশুদের জন্য ভিটামিন যুক্ত বিশেষ খাবার সরবরাহের তালিকা হচ্ছে।
আরজিনা বেগম বলেন, ‘সরকার বিশ কেজি চাল দিয়েছে। এই চাল টুকটাক করে খাওয়াচ্ছি। বাচ্চারা এগুলো খেতে পারে না।’ এখন পর্যন্ত বাঁধে আশ্রয় নেয়া মা ও শিশুদের জন্য বিশেষ কোন খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি। এদের পুষ্টির জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জনপ্রতিনিধিদের।
সারিয়াকান্দি কুতুবপুর ইউনিয়ন ইউপি সদস্য মো. সরাফত আলী বলেন, ‘আমি সরকারকে বলবো, মা ও শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেয়ার জন্য। তাহলে তারা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।’ এ অবস্থায় পুষ্টিকনা মিশ্রিত খাবার দেয়ার পরামর্শ চিকিৎসকের। বানভাসি শিশুদের তালিকা করে বিশেষ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আতিকুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিতভাবে তাদের পাশে আছেন এবং তাদের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও অন্যান্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।’
বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সিভিল সার্জন অফিস থেকে একটা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী শিশুদের পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হবে। এ কার্যক্রম অচিরেই শুরু হবে।’
জুলাই মাসে এ পর্যন্ত বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার প্রায় ১২ হাজার পরিবার বন্যার পানি ও যমুনার ভাঙ্গনে গৃহহারা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, বাঁধে ও উঁচু স্থানে ঠাঁই নেয়া পরিবারগুলোর মধ্যে ১ দিন থেকে ৮ বছরের শিশু রয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন