অবশেষে তলিয়ে গেল ২৪৬ একর জমির ধান
বন্যায় ভেঙে যাওয়া প্রায় ৪০ মিটার বাঁধ পুনঃনির্মাণ না করায় যমুনা নদীর পানি ঢুকে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের ভাঙ্গামোড়, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গজারিয়া ও কাতলামারী গ্রামের ২৪৬ একর জমির ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত ১৩ দিন থেকে পানিতে নিমজ্জিত থাকার পর গতকাল থেকে পানি নামতে শুরু করলেও নিম্নাঞ্চলের জমির ধানগাছ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এদিকে বাঁধের ভাঙা ওই অংশে একটি স্লুইসগেট নির্মাণের দাবি করেছেন গ্রামের ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, সাঘাটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের বন্যায় সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের ভাঙ্গামোড় গ্রামে ৪ বছরের বেশি সময় আগে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত প্রায় ৪০ মিটার একটি বাঁধের অংশ যমুনা নদীর পানির চাপে ভেঙে যায়। এরপর সেই বাঁধটি আর পুনঃনির্মাণ করা হয়নি।
সেই বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ভাঙ্গামোড়, গজারিয়া ও কাতলামারী গ্রামের ২৪৬ একর ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। এরমধ্যে সাঘাটার অংশে ৭৪ একর ও ফুলছড়ির অংশে ১৭২ একর। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, ধানের চারা, নিড়ানি, সার ও কিটনাশকসহ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই বাঁধটি নির্মাণ না করায় উপরমহলের নির্দেশ ছাড়া তারা সেই বাঁধ পুনঃনির্মাণ করতে পারবে না বলে জানা গেছে। অপরদিকে বাঁধটি পুনঃনির্মাণে সাঘাটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে একটি প্রকল্প পাঠানো হলেও সেটি পাশ না হওয়ায় কাজ করা সম্ভব হয়নি আজও। নদীতে আরও পানি বৃদ্ধি পেলে অপেক্ষাকৃত উঁচু অংশের আরও ৩০০ একরেরও বেশি ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে যেত বলে জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলতি আমন মৌসুমের ভাঙ্গামোড়, গজারিয়া ও কাতলামারী গ্রামের নিম্নাঞ্চলের ধান গাছগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিগুলোতে পানি ওঠেনি। এসব এলাকায় আরও ধানের জমি রয়েছে কয়েকশত একর।
ভরতখালী ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আজাদ শীতল বলেন, ভাঙা বাঁধটি থেকে উত্তরে নবাবগঞ্জ বাজার পর্যন্ত বাঁধটি স্থায়ীভাবে মেরামত করে মজবুত ও বাঁধের ভাঙা অংশে এলজিইডির অধীনে একটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হবে। এজন্য আগামী মাসে একটি প্রতিনিধিদল বিষয়টি যাচাই করতে গাইবান্ধা আসবেন।
সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম মুবিনুজ্জামান চৌধুরী ও মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নদী থেকে পানি ঢুকে ২৪৬ একর ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে। এখন এসব জমি থেকে পানি নদীতে নেমে যাচ্ছে। তবে নিচু জমিগুলোর কিছু ধান গাছ নষ্ট হতে পারে। যা দু-একদিনের মধ্যে জানা যাবে। আমরা প্রতিদিন রিপোর্ট দিচ্ছি। ধানক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হলে কৃষকদের সাহায্যে সহযোগিতা চাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘গাইবান্ধায় ভাঙা বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেই’ ও ৩১ আগস্ট ‘পানি বাড়লেই তলিয়ে যাবে ৫০০ একর ধানক্ষেত’ শিরোনামে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন