অবশেষে পদ ছাড়ছেন পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী

অবশেষে পদত্যাগ করতে চলেছেন পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদ। বিক্ষোভকারী দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সমঝোতা হওয়ায় তিনি এই পদ ছাড়ছেন। সরকারি সূত্র ও পিটিভি’র বরাতে সোমবার এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের ডন অনলাইন। এতে বলা হয়েছে, শনিবার রাজধানীর ফাইজাবাদে বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ চড়াও হলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিক্ষোভকারী ও সরকারের মধ্যস্থতাকারীদের সফল আলোচনার ভিত্তিতে আইনমন্ত্রী পদত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, নির্বাচনে প্রার্থীদের নেওয়া শপথের একটি অংশে ‘মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)’ অংশটি বাদ পড়ার পর আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে তার অপসারণ চেয়ে গত ৬ নভেম্বর থেকে রাজধানীতে বিক্ষোভ করছে পাকিস্তানের কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠন তেহরিক-ই-লাবাইকের কর্মীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জন্য সুবিধাজনক ওই শপথে পরিবর্তন আনা ব্লাসফেমির শামিল। যদিও এ ঘটনা একজন ক্লার্কের ভুলে হয়েছে জানিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন জাহিদ হামিদ।

স্বল্পপরিচিত ইসলামপন্থী এই সংগঠনের কর্মীদের বিক্ষোভ লাহোর, করাচি, গুজরানওয়ালা, ফয়সলাবাদসহ আরো কয়েকটি শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে গত শনিবার ফাইজাবাদ থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে ব্যাপক সহিংসতা হয়। এতে অন্তত ৬ জন নিহত ও কয়েকশ’ মানুষ আহত হন। আহতদের মধ্যে দেড় শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোকে সংঘর্ষের ঘটনার সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এক পর্যায়ে ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়।

ডন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাতে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধির সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। সেখানে তারা একটি সমঝোতায় আসেন এবং তারই সূত্র ধরেই পদত্যাগ করছেন আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদ।

পিটিভি সূত্র জানায়, জাহিদ হামিদ তার পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকন আব্বাসীর কাছে জমা দিয়েছেন। এতে রাষ্ট্রীয় সংকট উত্তরণে পদ ছাড়ার কথা বলা হয়েছে।

তবে পরে সরকারি সূত্রকে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে আমি মন্ত্রিত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ দিনের শেষভাগে জাহিদ হামিদের পদত্যাগ কার্যকর হবে বলে প্রত্যাশা করছেন প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকন আব্বাসী।

তেহরিক-ই-লাবাইকের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হলেও এতে যোগ দেন তেহেরিক-ই-খতমি নব্যুয়ত, সুন্নি তেহেরিক পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা।