অবশেষে প্রশ্ন ফাঁসের মূল কারণ শনাক্ত
এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল কারণ শনাক্ত করেছে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্তে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র তৈরি এবং বিতরণ ব্যবস্থায় নানা দুর্বলতা চিহ্নিত হয়েছে। এসব কারণ উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বাধীন কমিটি।
কমিটির প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘আমরা তদন্ত শেষ করেছি। বর্তমান যে পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র তৈরি হয় এবং বিতরণ হয় সেখানে প্রশ্ন ফাঁসের অনেক সম্ভাবনা থাকে। সেগুলো আমাদের তদন্তে উঠে এসেছে।’
চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া না গেলেও চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার প্রায় প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। কেবল চলতি বছরেই নয়, গত কয়েক বছর ধরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। এসব প্রশ্ন আবার তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে খুব সহজেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
প্রশ্ন ফাঁসের এ প্রবণতা ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও কোন কাজে আসনি। এসএসসি পরীক্ষা চলার সময় একটি রিট আবেদনে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কমিটি এবং ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে বিচারিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দুই কমিটিরই সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। কমিটি দুটিকে প্রশ্ন ফাঁসের কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিরোধের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা দেয়া হয়।
এর মধ্যে বিচারিক কমিটি তদন্ত অগ্রগতি সম্পর্কে কোন তথ্য জানা যায়নি। তবে প্রশাসনিক কমিটির প্রধান কায়কোবাদ জানিয়েছেন, তাদের অনুসন্ধান শেষ, শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে প্রশ্ন ফাঁসের সম্ভাব্য কারণ যেমন তারা চিহ্নিত করেছেন, তেমনি এ অপকর্ম ঠেকাতে কী কী করা যায় সে বিষয়ে সুপারিশও থাকবে।
প্রশ্ন ফাঁসের কারণ এবং সমাধানের সুপারিশের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে অবশ্য রাজি হননি কমিটি প্রধান। তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে না। এটি আমরা জমা দিলে পরে আপনারা (সাংবাদিক) জানতে পারবেন।’
তবে প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিতরণে কিছু ত্রুটির কথা জানিয়েছেন ড. কায়কোবাদ। বলেন, ‘এই পুরো কাজে ২০০ থেকে ২৫০ জন মানুষ যুক্ত থাকে। এত মানুষ যুক্ত থাকলে কীভাবে প্রশ্নফাঁস রোধ করবেন। এ পদ্ধতিতে কোনোভাবেই প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা সম্ভব না। নতুন পদ্ধতি অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। সে বিষয়টি আমরা আমাদের সুপারিশে তুলে ধরেছি।’
প্রতিবেদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের কমিটিও
গত এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সে কমিটিও প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আমরা সেটিকে পর্যালোচনা করছি। এর সঙ্গে যাদের জড়িত হওয়ার তথ্যপ্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রক্রিয়া।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন