অবশেষে মারা গেল ‘রাজলক্ষ্মী ’
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরতলীর উত্তরভাড়াউড়া এলাকায় এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা ‘রাজলক্ষ্মী‘ নামের সেই বিশাল পোষা হাতিটি মারা গেছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাতিটি মারা যায়।
হাতিটির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।
তিনি জানান, হাতিটি মারা যাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট ১টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত মতে ঢাকা থেকে অভিজ্ঞ টিম এনে এর ময়নাতদন্ত করা হবে।
জানা যায়, মৃত হাতিটির মালিক কমলগঞ্জ উপজেলার সিরাজুল ইসলাম। গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাত ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে হাতিটিকে কমলগঞ্জ আনা হচ্ছিল। অজ্ঞাত কারণে শ্রীমঙ্গলের মৌলভীবাজার রোডস্থ ৫ নং ব্রিজের পাশে হাতিটিকে একটি ট্রাক থেকে নামানোর সময় হাতিটি শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে গত ১ সপ্তাহ এক জায়গায় অবস্থান করছিল। সেখান থেকে হাতিটিকে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি।
হাতির মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন কাজের জন্য হাতিটিকে ভাড়া দেয়া হয়। কয়েক মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক লোক সার্কাসের জন্য হাতিটি ভাড়া নেয়। দুই মাস কাজ বন্ধ থাকায় খাওয়ানোর জন্য তাকে কমলগঞ্জ নিয়ে আসছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হাতিটিকে কমলগঞ্জ না নামিয়ে শ্রীমঙ্গল নামাতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এর পর থেকে হাতিটিকে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভ্যাটেনারি সার্জন ডা. আরিফুর রহমান জানান, তিনি ৭দিন ধরে হাতিটিকে ঢাকা চিড়িয়াখানা ও ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে হাতিটিকে খাবারের যোগান হিসেবে স্যালাইন দেয়া হয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে একটু একটু খাবার নিলেও পরিমানে খুব কম।
তার ধারণা হাতিটি মেরুদণ্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তার পেছনের ডান পা উঠাতে পারছিল না।
হাতির মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, তার দাদার আমল থেকেই তারা হাতি পালন করে আসছিলেন। একসময় তাদের ৮টি হাতি ছিল, এখন মাত্র ২টি। অপর একটি হাতি তাদের এক চাচার অংশে পড়েছে।
তিনি জানান, এই হাতিটিই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ছিল।
তিনি জানান, গত ৬দিন হাতিটি এক জায়গায় পড়েছিল। যেখানে পড়েছিল সে জায়গা গর্ত হয়ে কাঁদায় পরিনত হয়েছিল। বুধবার বিকালে আরও একটি হাতি দিয়ে টেনে তার স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, প্রায়ই হাতি দিয়ে গাছ ও বিভিন্ন ভারি জিনিসপত্র বহন করা হয়। এতে করে বেশির ভাগ সময়ই হাতির প্রচুর পরিশ্রম হয়। এবং অনেক সময় হাতিগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসব ব্যাপারে বন বিভাগকে দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানান তারা।
রাজলক্ষ্মীর ওজন প্রায় ৩ হাজার কেজি হবে। তার বয়স প্রায় ৩৫ বছর।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন