অযোগ্য ঘোষিত হচ্ছেন খাকান আব্বাসিও?
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগেই আদালতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজ (পিএমএল-এন) দলীয় নেতা শহিদ খাকান আব্বাসিকে।
জাতীয় পরিষদের আস্থা ভোটে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য শহিদ খাকান আব্বাসি যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক তখনই তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের হাইকোর্টে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৫ সালে ন্যাশনাল অ্যাকিউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (ন্যাব) দায়েরকৃত মামলার রেফারেন্স উল্লেখ করে পিটিশন দায়ের হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তিনি যোগ্য কি না তা খতিয়ে দেখতে চেয়ে ওই পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। পাকিস্তানের সাবেক পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী খাকান আব্বাসির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে দুর্নীতির অভিযোগে ন্যাব মামলা করে। মামলায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির একটি চুক্তিতে ২০০ কোটি ডলার দুর্নীতির প্রধান সন্দেহভাজন ছিলেন তিনি।
ওই সময় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি ও বিতরণে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় । ওই সময় চুক্তিতে ২০০ কোটি ডলার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এতে বলা হয়, কোম্পানিটিকে অবৈধ সুযোগ দিয়েছেন আব্বাসি।
সোমবার পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের হয়েছে। এতে আব্বাসিকে ‘অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার দেশটির জাতীয় পরিষদে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘জাস্টিস হেল্পলাইন’ ওই পিটিশন দায়েরের পর বলছে, সাবেক পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি ২০১৫ সালে ন্যাবের দায়ের করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার প্রধান সন্দেহভাজন অভিযুক্ত ছিলেন।
মামলার অন্য সন্দেহভাজনদের মধ্যে সাবেক পেট্রোলিয়াম সচিব আবিদ সায়িদ, ইন্টার স্টেট গ্যাস সিস্টেমসের (আইএসজিএস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোবিন সউলত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এনগ্রো’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরানুল হক ও সুই সাউদার্ন গ্যাস কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জুহাইর আহমেদ সিদ্দিকিও রয়েছেন।
‘জাস্টিস হেল্পলাইন’ বলছে, আব্বাসির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ন্যাবের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ নওয়াজ শরিফের হস্তক্ষেপে তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, শহীদ খাকান আব্বাসির বিপক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে আরও ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সাইদ খুরসীদ শাহ এবং সাইদ নাভেদ কামার, আওয়ামী মুসলিম লীগের (এএমএল) শেইখ রাশিদ আহমেদ। রাশিদ আহমেদকে সমর্থন দিয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এছাড়া জামায়াত-ই- ইসলামের (জেআই) শাহিবজাদা তরিকুল্লাহ এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের (এমকিউএম) কিশর জেহরা।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে শুক্রবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী পদের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। ঘোষণার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের তথ্য জানানো হয়। নওয়াজের রাজনৈতিক দল পিএমএল-এন নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুনে শেষ হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন