অর্থনৈতিক সংকটের মুখে উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ। নতুন এই অবরোধ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ে পেট্রোলিয়াম সরবরাহ সীমিত করা হবে এবং উত্তর কোরিয়ার যেসব কর্মী বিদেশে আছেন, তাদের দেশে ফিরে যেতে হবে।
উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জের ধরেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই বিষয়ের উপর ভোটাভুটি হয়। রাশিয়া চীনসহ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের সবাই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি নিষেধাজ্ঞার খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞা উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত এই প্রস্তাবে উত্তর কোরিয়ায় বছরে ৪০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, কেরোসিন এবং ডিজেল সরবরাহ সীমিত করে ৫ লাখ ব্যারেলে নামিয়ে আনা হয়েছে, এর আগে যা ২০ লাখে সীমিত করা হয়েছিল। এছাড়া প্রস্তাবে আগামী দু’বছরের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার কর্মীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়া ও চীনে লাখো শ্রমিককে ক্রীতদাসের মতো কাজ করার জন্য পাঠাচ্ছে, যাতে তারা দেশে বিদেশি মুদ্রা পাঠাতে পারেন। দেশটির বৈদ্যুতিক ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ পণ্য রফতানিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করা ১৬ জন উত্তর কোরীয় কর্মকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে স্পষ্টত এ বার্তাই দেওয়া হলো যে, এরপরও তারা বেপরোয়া আচরণ করলে আরও শাস্তি পাবে এবং আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বছরে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো অবরোধ আরোপ করা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার ওপর। গত ১১ বছরে এই সংখ্যা ১০ বার, যা দেশটির অর্থনীতিতে বেশ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তারা। বলা বাহুল্য, তেল সরবরাহ সীমিত করলে উত্তর কোরিয়ার শিল্প খাতে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।
গত ২৯ নভেম্বর সর্বশেষ পরীক্ষামূলকভাবে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া। এটি ছিল দেশটির পরীক্ষিত সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অংশ আঘাত হানতে সক্ষম বলে জানিয়েছিলেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশটি এ সব কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর পিয়ংইয়ং তাদের ষষ্ঠতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সূত্র: ডয়চে ভেলে
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন