আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী’র পরাজয়েও শঙ্কামুক্ত নয় বিশ্ব
ইরাক ও সিরিয়ার উলে্লখযোগ্য অংশ হারিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মানচিত্র প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
মার্কিন ও রুশ নেতৃত্বাধীন পৃথক সামরিক জোটের ধারাবাহিক বিমান হামলায় বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে একের পর এক বড় বড় শহর হাতছাড়া হয় আইএসের।
জুলাইয়ে মসুল, অক্টোবরে রাকা, নভেম্বরে দেইর আল জোর ও আল কাইম থেকে পাততাড়ি গোটাতে হয় তাদের।
ইরাক ও সিরিয়ার ৯৫ ভাগ ভূখণ্ড আইএসের দখল থেকে উদ্ধার করা হয়। দুই দেশে কোণঠাসা হয়ে আইএসের ৫,৬০০ বিদেশি সদস্য নিজেদের দেশে ফিরে গেছে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য সেৌফ্যান সেন্টার।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৪ সালের জুনে খিলাফত ঘোষণার পর বিশ্বের ১১০টি দেশের আনুমানিক ৪০ হাজার সদস্য আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া ও ইরাকে আসে।
তাদের মধ্যে রাশিয়ায় ৪০০, সেৌদি আরবে ৭৬০, তিউনিশিয়ায় ৮০০ এবং ফ্রান্সে ২৭১ জঙ্গি ফিরে গেছে। দেশফেরত এসব জঙ্গিরা আগামী দিনগুলোতে এসব দেশে বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখা দেবে। এজন্য আইএসের পতন হলেও বিশ্ব এখনও পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত হয়নি।
আফগানিস্তানে সম্প্রতি তত্পরতা বাড়িয়েছে আইএস। ১৩ এপ্রিল আফগানিস্তানের আইএস ঘঁাটিতে ‘মাদার অব অল বমস’ ছোড়ে পেন্টাগন।
সিরিয়া ও ইরাক আইএসমুক্ত হলেও জঙ্গি দলটির শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদিকে নিয়ে রয়েছে ধঁোয়াশা। রাশিয়ার দাবি, বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বাগদাদি।
কিন্তু সেপ্টেম্বরে তার একটি অডিও বার্তা প্রকাশিত হয়। নভেম্বরে হিজবুল্লাহ পরিচালিত একটি সাইট জানায়, আইএস নেতা বাগদাদিকে সিরিয়ায় দেখা গেছে।
২০১৭ সালের প্রথম দিনটি থেকে প্রায় প্রতি মাসেই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও আইএস সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে।
বছরের প্রথম প্রহরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি নাইট ক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় ৩৯ জন নিহত হন। গত এক বছরে কয়েক দফা হামলা হয়েছে যুক্তরাজ্যে।
২২ মার্চ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে হামলায় পুলিশসহ ৫ জন, মে মাসে ম্যানচেস্টারে আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্টে আত্মঘাতী হামলায় ২২ জন এবং জুন মাসে লন্ডন ব্রিজে ভিড়ের মধ্যে ভ্যান চালিয়ে দিলে ৭ জন নিহত হন।
অক্টোবরে মোগাদিসুতে বোমা হামলায় ৫ শতাধিক ও নভেম্বরে মিসরের সিনাই উপত্যকায় মসজিদে বন্দুক হামলায় তিন শতাধিক মুসলি্ল নিহত হন।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে পাকিস্তানের সন্ধিু প্রদেশে একটি মাজারে আত্মঘাতী হামলায় ৮০ জন এবং অক্টোবরে একইদিনে আফগানিস্তানের দুটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৭২ জন নিহত হন।
এসব হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। এ বছরই আইএস প্রথমবারের মতো ইরানে হামলা চালিয়ে ১৭ জনকে হত্যা করে।
আগস্টে বার্সেলোনায় ভিড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে ১৪ জন, নভেম্বরে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে রাস্তায় ট্রাক তুলে ৮ জনকে হত্যা করে আইএসের অনুসারী।
বছরের শেষ প্রানে্ত নিউইয়র্কের বাস টার্মিনালে আত্মঘাতী হামলা চষ্টোর ঘটনায় এক বাংলাদেশি অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন