আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সততার সহিত দায়িত্ব পালন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

ময়মনসিংহে এড.তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মোঃ ওবায়দুল হাসান। প্রধান বিচারপতি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান।

তাঁর ছোট ভাই সাজ্জাদুল হাসান এমপি,সাবেক সিনিয়র সচিব বর্তমানে নেত্রকোনা-৪ (মোহনগঞ্জ- মদন- খালিয়াজুরী) আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য।প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার সাথে সুশাসনের ধারণাটি সম্পৃক্ত।

মানবাধিকার ও আইনের শাসনের মূল উপাদান হলো স্বাধীন ও কার্যকর বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।মানুষ হিসেবে ও আইনজীবী হিসেবে আমার প্রত্যাশা থাকবে আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সৎ থাকবেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতকে সহায়তা করুন।

মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।বিচারকদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রভাব এড়িয়ে চলুন।আইনের বিধিবিধান ও বিচারকার্যের রায়ের প্রতি সম্মান রাখুন। বিচারকদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবসময় সহায়তামূলক মনোভাব ও সাহায্যের মানসিকতা রাখতে আইনজীবীদের আহ্বান জানান।

শনিবার (১ জুন) ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে ময়মনসিংহ টাউন হলের অ্যাড. তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা দেওয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা কালে তিনি এসব কথা বলেন।সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, আমাদের বিচারব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে একটি দীর্ঘমেয়াদী জুডিসিয়াল প্লান তৈরি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে আমাদের বিচারবিভাগ ও বার কাউন্সিলের অনেকবার আলোচনা সভা ও বৈঠক হয়েছে এবং বিচারিক স্টেক হোল্ডারগনের সাথেও আমরা বসবো। অতীতের মত নিয়মিত তদারকির মধ্য দিয়ে আমরা ধাপে ধাপে সব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠবো বলে আমার বিশ্বাস।প্রধান অতিথি তরুণ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভবিষ্যতে একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী হতে হলে লেখাপড়া ও গবেষণার বিকল্প নেই।

আপনারা অনেক মেধাবী।মেধাকে কাজে লাগিয়ে এবং পরিশ্রম ও সততার সাথে সামনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে ময়মনসিংহের শিল্প-সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরবময় ইতিহাস ও বীরত্ব গাঁথার স্মৃতিচারণ করেন।

এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ধার্মিক মানুষ কিন্তু অসাম্প্রদায়িক।ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষও অসাম্প্রদায়িক। এ অঞ্চলের সাহিত্য সারা পৃথিবী জুড়ে সমাদৃত।বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এ জনপদের মানুষ স্বাধীনতার কথা চিন্তা করা ও স্বপ্ন দেখানো শিখিয়েছে বাংলাদেশকে।

তাইতো বঙ্গবন্ধু তার জীবনে স্বাধীনতার আগে ও পরে ৪৭ বার এ জনপদে এসেছেন। এ জনপদের অসাম্প্রদায়িকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে আমি আশা করি। ময়মনসিংহ অঞ্চলের স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা ও গবেষণার কাজে যুক্ত থাকার জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান।

ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফজলুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, বিজ্ঞ জজ মমতাজ বেগম, ময়মনসিংহ বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট মো: জহিরুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য ও ময়মনসিংহ বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন, ময়মনসিংহ বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট এ এইচ এম খালেকুজ্জামান।

ময়মনসিংহ বারের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, ময়মনসিংহ বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জালাল উদ্দিন খান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

নেত্রকোনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ময়মনসিংহ বিভাগের বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, এ বিভাগের আইনজীবীগণ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।