আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না : আ.লীগ

দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়া নির্বাচন ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অশ্রুসজল নয়নে জাতির সামনে বলেছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়াই তারা এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কারণ, তারা জানতেন বিএনপি যতই রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করুক না কেন, আইনের চোখে তিনি (খালেদা জিয়া) একজন এতিমের টাকা আত্মসাতকারী ও সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন না।’

ক্ষমতার মোহে ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করছেন দাবি করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘ড. কামাল হোসেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানের জন্মলগ্ন থেকেই সংবিধানে ‘অনুচ্ছেদ ৬৬’ লেখা রয়েছে। ড. কামাল হোসেন আজ ক্ষমতার মোহে নিজের বাংলাদেশের সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করছেন। কী বিচিত্র এ দেশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি একই প্রক্রিয়ায় বিএনপি দেশের উচ্চ আদালতকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে, দুর্নীতিবাজ খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির পাঁয়তারা করতে তিনটি রিট পিটিশন দায়ের করে। হাইকোর্ট এসব আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানকে অনুসরণ করেছেন। তবে জাতির দুর্ভাগ্য এই যে,হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ নিয়ে বিএনপি তার চিরাচরিত মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছে। আমরা বিএনপির অপরাজনীতি পরিহার করে, দেশের আইন সংবিধান, আদালত ও বিচার প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের আস্থাভাজন ও শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচনি প্রচার কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশে ও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের মতো বিএনপি নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকার পরও, খালেদা জিয়ার মতো এতিমের টাকা আত্মসাতকারী দুর্নীতিবাজের পক্ষাবলম্বন করে, নির্বাচনে সুযোগ প্রদানের বিভিন্ন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে কলুষিত করে একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজের পক্ষে জনগণের সহানুভূতি সৃষ্টির অপকৌশল হিসেবেই এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।’

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসূচি প্রসঙ্গে আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (১২ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মাজার জিয়ারত করবেন। তিনি সড়কপথে মঙ্গলবার সকালে টুঙ্গিপাড়ায় উপস্থিত হবেন এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। তিনি ১৩ ডিসেম্বর সড়কপথে ঢাকা ফেরার পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড়, ফরিদপুর মোড়, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়, পাটুরিয়া ঘাট, মানিকগঞ্জ বাস ট্যান্ড, ধামরাই রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও সাভার বাসস্ট্যান্ডে নির্বাচনি প্রচার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম,বিএম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দফত সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া,কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।