আওয়ামী লীগ আমাদের প্রধান শত্রু- বিএনপি মহাসচিব

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার (আওয়ামী লীগ) আমাদের প্রধান শত্রু। তারা দেশের সবকিছু ধ্বংস করে ফেলেছে। আমাদের সুর একটাই, এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। আন্দোলন চলছে, আন্দোলন চলবে।

শিগগিরই আমাদের আন্দোলন আরও বেগবান হবে। আমরা সব দল (সমমনা) একত্রিত হতে পেরেছি। কিভাবে এই সরকারকে সরাতে পারি, কিভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারি, সেই লক্ষ্যেই আমরা সংগ্রাম করছি।

বুধবার (১২ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকট-উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। এরা রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে এবং অর্থনৈতিক কাঠামোও ধ্বংস করেছে। আমরা লড়াই করছি। আমাদের ইতোমধ্যে অনেক অর্জন হয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে বিভিন্ন বাম-ডান চিন্তার রাজনৈতিক দলগুলোকে মিলিয়ে আমরা আন্দোলনে একমত হয়েছি।’

বিরোধী রাজনৈতিক দলের ঐক্য ‘একাট্টা’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ভিত্তিতে কাজ করেছি। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি, সেই ৩১ দফাতে এদেশের প্রত্যেক মানুষের কথা বলা আছে। রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তনের কথা বলা আছে। অর্থনীতি কাঠামো পরিবর্তনের কথা বলা আছে। এই ৩১ দফা এখন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণ একটা জিনিসে স্থির। সেটা হচ্ছে, তারা এই সরকারকে চায় না। এটা হচ্ছে, মূল কথা। এটা আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে। জনগণের না চাওয়ার যে ইচ্ছা, আমরা সেটাকে কী করে ইতিবাচক কাজে নিয়ে তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) পরাজিত করতে পারি, সেই কাজটি আমাদের করতে হবে। ইতোমধ্যে বাম-ডান সবার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি।

শরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলন দৃঢ় করার জন্য আপনারা সবাই কাজ করছেন। আমি অনুরোধ করব যে, আপনারা এমন কোনো কথা বলবেন না, যাতে এই ঐক্যে কখনো বিভক্তি সৃষ্টি হয়। ঐক্য বিনষ্ট হয়।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। নীতি-নৈতিকতা নেই। যাই চলছে নীতিহীনতা। সিন্দাবাদের দৈত্যের কাছ থেকে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এই দলের কাছ থেকে গণতন্ত্র একবার উদ্ধার করতে হয়েছিল। এখন গণতন্ত্র উদ্ধার করা আরও কঠিন। এরা গত ১৬ বছর দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। পৃথিবীতে আরও অনেক বড় বড় স্বৈরাচার ছিল, তাদের পতন হয়েছে। এই সরকারেরও পতন হবে।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আকবর খানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্র্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণফোরাম একাংশের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

এবি পার্টির এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আশরাফ আলী আখন্দ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নুরুল হক নুর, অপর অংশের মিয়া মশিউজ্জামান, জাগপার রাশেদ প্রধান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নিশিখা জামালী প্রমুখ।